মাথাভাঙ্গা মদনমোহন বাড়ির পুজো। কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা মহকুমা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মাথাভাঙ্গা মদনমোহন বাড়ি। আর এই মদনমোহন বাড়িতেই ১২৮ বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছেন দেবী দুর্গা। প্রাচীন ঐতিহ্য ও রীতিনীতি মেনে এখানে দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়। পঞ্চমী থেকে দশমী রীতিমতো জাঁকজমকপূর্ণ দুর্গা পুজো হয় মাথাভাঙ্গার মদনমোহন বাড়িতে। তবে বিগত দু’বছর করোনার কারণে এখানে দুর্গা পুজো বন্ধ ছিল। তবে এ বছর করোনার প্রভাব অনেকটাই কম থাকায় দুর্গা পুজোর প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে এখানে।
মদনমোহন বাড়ির পুজো কমিটির সম্পাদক কানু ঘোষ বলেন, “প্রাচীন ঐতিহ্য ও রীতিনীতি মেনে এখানে দুর্গা পুজো করা হয়। ১২৮ বছর ধরে এখানে এই দুর্গা পুজো হয়ে আসছে। পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত এখানে দেবী দুর্গা মায়ের আরাধনা করা হয়ে থাকে। দশমীর পরে মাকে বিসর্জন দিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া এ মন্দিরে বাসন্তী পুজোও করা হয়। বাসন্তী পুজোর পর সেই মূর্তি রেখে দেওয়া হয় মন্দিরে। সেই মূর্তি দুর্গা পুজোর পঞ্চমীর তিনদিন আগে বিসর্জন দেওয়া হয়।”
আরও পড়ুন – ট্যাবলেটে দুর্গা মুর্তি বানিয়ে জাতীয়স্তরে পুরস্কৃত হল বীরভূমের প্রসেনজিৎ
মাথাভাঙ্গা মহকুমা শহরের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন এই মদনমোহন বাড়ির দুর্গা পুজো সর্বপ্রথম দুর্গা পুজো মাথাভাঙ্গার বুকে। তাই এই দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে গোটা মাথাভাঙ্গা শহরবাসীর উদ্দীপনা যেন থাকে অন্যরকম। দুর্গা পুজোর পূর্ণ তিথিতে মাথাভাঙ্গার বাসিন্দারা এখানে এই দুর্গা পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন। এখানে দুর্গা পুজোর অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল পুজোর কয়েকদিন এখানে বিপুল পরিমাণ ভোগের প্রসাদ রান্না করা হয়। যে কোন সাধারণ মানুষ এখান থেকে ভোগের প্রসাদ সংগ্রহ করতে পারেন।
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ চৌধুরী জানান, “সেই ছোট বেলা থেকেই আমরা এখানে দুর্গা পুজো দেখে আসছি। এখানে দুর্গা পুজোর ঐতিহ্য ও রীতিনীতি সম্পূর্ণ আলাদা। পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত এখানে সাধারণ মানুষের ভিড় যেন উপচে পড়ে। দশমীর দিন সিঁদুর খেলার মাধ্যমে এখানের দুর্গা পুজোর সমাপ্তি হয়।” তবে দু’বছর বাদে দুর্গা পুজোর প্রস্তুতি শুরু হওয়ার কারণে, আনন্দে ভাসছেন মাথাভাঙ্গা শহরবাসীর একাংশ। এবছর দুর্গা পুজো একপ্রকার জমজমাট হতে চলেছে মাথাভাঙ্গা মহকুমা শহরেও।