মানুষের কান্না শুনুন : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যুক্তরাষ্ট্রী পরিকাঠামোর উপর নেমে আসছে আঘাত। এই অবস্থায় একমাত্র দেশকে রক্ষা করতে পারে বিচার ব্যবস্থা। রবিবার বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্সের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিচারব্যাবস্থার কাছে দেশের গণতন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো রক্ষার আর্জি জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, দেশের পরিস্থিতি সাংঘাতিকভাবে খারাপ হতে শুরু করেছে। দেশ ক্রমে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় একমাত্র বিচারব্যবস্থাই সহায়। বিচারব্যবস্থার কাছে তাঁর আর্জি, দয়া করে মানুষের কান্না শুনুন। সঠিক ব্যবস্থা নিন। দেশকে রক্ষা করুন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন মিডিয়া ট্রায়াল নিয়েও সরব হন। এদিনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য উদয় ঊমেশ ললিত, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব-সহ বিশিষ্টজনেরা। সেই মঞ্চ থেকেই বিচারব্যবস্থার কাছে গণতন্ত্রকে রক্ষার আবেদন জানান।
মিডিয়া ট্রায়ালের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে তিনি বলেন, আইন মানুষের জন্য হওয়া উচিত। বিচারব্যবস্থা মন্দির-মসজিদ-গির্জার মতো। শান্তি কায়েম করার জন্য, মানুষের স্বাধীনতার জন্য রয়েছে বিচারব্যবস্থা। এরপরই তাঁর অভিযোগ, পরিস্থিতি খারাপ থেকে অতি খারাপতর হচ্ছে।
আরও পড়ুন – পদ্মা পারের হাওয়ায় উত্তাল গঙ্গা পারের কলকাতা
তিনি আইন পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলেন, আইনজাবীরা এগিয়ে আসুন দেশরক্ষায়। বিচারের আগেই যেভাবে মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে, তা বাঞ্ছনীয় নয়। সংবাদমাধ্যম কখনও বিচার ব্যবস্থাকে কন্ট্রোল করতে পারে না। তারা কাউকে অপরাধী বলে দিতে পারে না। কারও সম্মানহানি করতে পারে না। মানুষের সম্মানই বড়। আমাদের সম্মান চলে গেলে সব চলে যায়। বিচারব্যবস্থার কাছে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, যাঁরা এখন বিচারব্যবস্থার মাথায় আছেন, যাঁরা ভবিষ্যতে যাবেন এই জায়গায়, আপনাদের সকলের কাছে আমার আর্জি যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো রক্ষা করুন। অযথা মানুষকে হেনস্থা করা হচ্ছে। মানুষকে হেনস্থার হাত থেকে বাঁচান।
প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ললিতজির হাতে দু-মাস আর সময় আছে। তারপর তিনি অবসর নেবেন। তার আগে তিনি ব্যবস্থা নিন। এবার বিচারব্যবস্থার মানুষের কান্না শোনার সময় এসেছে। বিচারব্যবস্থাই গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে রক্ষা করতে পারে।