নদিয়া – নদিয়ার মায়াপুরে অবস্থিত ইস্কনের রাজাপুর শাখাকেন্দ্র জগন্নাথ মন্দিরে প্রতি বছরের মতো এবারও জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমায় (১১ জুন ২০২৫, বুধবার) ধর্মীয় আড়ম্বরের মধ্য দিয়ে পালিত হল শ্রীশ্রী জগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্রা মহারানীর ঐতিহ্যবাহী স্নানযাত্রা উৎসব।
ইস্কন সূত্রে জানা গিয়েছে, শাস্ত্র মতে জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা তিথিতে স্বয়ম্ভু মনুর যজ্ঞের প্রভাবে শ্রীজগন্নাথদেব মর্ত্যে আবির্ভূত হন। সেই কারণেই এই দিনটি তাঁর জন্মতিথি হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এই উপলক্ষ্যে স্নানযাত্রা উৎসব পালিত হয়।
এই বছরও ১০ ও ১১ জুন—দুই দিনব্যাপী নানা ধর্মীয় আচার, শোভাযাত্রা এবং স্নানযজ্ঞের মাধ্যমে স্নানযাত্রা উৎসব পালন করা হয়। দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত এই পবিত্র অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা গঙ্গাজল, ডাবের জল ও নানা ফলের রস দিয়ে প্রভু জগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্রা মহারানীকে স্নান করান এবং তাঁদের কৃপালাভের আশায় পূজা দেন।
ইস্কনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস জানান, “স্নানযাত্রা হল মহাপ্রভু জগন্নাথদেবের বার্ষিক স্নান কেন্দ্রিক এক মহোৎসব। এই দিন মহাপ্রভু সহ বলদেব, সুভদ্রা, সুদর্শন ও মদনমোহনের বিগ্রহ শোভাযাত্রা সহকারে স্নানবেদিতে আনা হয় এবং ভক্তরা একত্রে স্নানযজ্ঞে অংশ নেন।”
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, স্নানযাত্রার পর জগন্নাথদেব অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাজবৈদ্যের চিকিৎসায় পক্ষকাল অদৃশ্য থাকেন। এই সময় তাঁর দারুবিগ্রহ দেখা না গেলেও, পটচিত্রে পুজো করা হয়। রাজবৈদ্যের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়ে নববেশে ভক্তদের সামনে আসেন, যেটিকে নবযৌবন উৎসব বা নেত্রোৎসব বলা হয়।
উৎসবকে ঘিরে গোটা রাজাপুর মন্দির প্রাঙ্গণ পরিণত হয় এক ধর্মীয় মিলনমেলায়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ ভক্তিভরে সামিল হন এই আচার-অনুষ্ঠানে।
