হারাতে চান কোনো মায়াবী নীল সুন্দরী অরণ্যে? তাহলে ঘুরে আসুন এখানে। ব্লুবেল। বনের মাঝে খুঁজে পাওয়া যায় মিষ্টি ব্লুবেলদের। নীলাভ বেগুনি রঙের ঘণ্টাকৃতির এই ফুলটি ফোটে বসন্তকালে। তারপর পুরো বসন্তকাল জুড়ে চলে ব্লুবেলের বিস্ময়কর প্রদর্শনী।
এই ব্লুবেল নিয়ে প্রচলিত আছে নানা উপকথা। ব্লুবেলের ঘণ্টা নাকি বাজানো হতো পরীদের সভা ডাকতে। আর আপনি যদিও ভুলেও ব্লুবেল ছিঁড়েছেন, তাহলে পরীরা আপনাকে পথ ভুলিয়ে ছাড়বে!
আর এই বহুবর্ষজীবী ব্লুবেলের অনেকগুলো প্রজাতি আছে। সেসবের মধ্যে ইংলিশ ব্লুবেল জন্মে বনে-বাদাড়ে। চিরহরিৎ বনের ঘন গাছগাছালির চাদরের নিচে এরা জন্মাতে পারে না। মূলত পাতাঝরা বনের গাছগুলোয় যখন নতুন পাতা জন্মে, সেই পাতার ছায়ায় জন্মায় এই নীল সুন্দরী। বুনো ব্লুবেল শাখার একপাশে ঝুলে থাকে।
আর ও পড়ুন গ্যাংস্টার জিতেন্দ্র খুন, আইনজীবীর পোশাকে হামলাকারীরা, কী ঘটেছে রোহিণী আদালতে?
অন্যদিকে স্প্যানিশ ব্লুবেল সোজা কাণ্ডের আগায় ঝুলতে থাকে। স্কটল্যান্ডের জাতীয় ফুল স্কটিশ ব্লুবেলের কথাও ভুলে গেলে চলবে না। এদের ঘণ্টার আকৃতি একটু অন্যরকম। এদেরকে বলে হেয়ারবেল। ব্লুবেল অরণ্যে হেঁটে যাওয়ার সময় এর তীব্র সুগন্ধ আপনার নাকে এসে লাগবে। ব্লুবেলের উপস্থিতি বনের প্রাচীনত্বের প্রতীক।
সৌন্দর্য ছাড়াও ব্লুবেলের আছে বেশ কিছু ঔষধি গুণ। প্রাণোচ্ছল ব্লুবেল অরণ্য দেখতে চান ব্লুবেলের কার্পেট? হারাতে চান কোনো মায়াবী ব্লুবেল অরণ্যে? তাহলে আপনাকে যেতে হবে ইংল্যান্ডে। কারণ, ব্লুবেলের চাদরে ছাওয়া বনভূমি ইংলিশ বসন্তের অবিচ্ছেদ্য অংশ। চলুন ঘুরে আসা যাক ইংল্যান্ডের ব্লুবেল অরণ্য আশরিজ এস্টেট থেকে। হার্টফোর্ডশায়ার, বাকিংহামশায়ার ও বেডফোর্ডশায়ার এর সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত এই এস্টেটটি ন্যাশনাল ট্রাস্টের একটি বনাঞ্চল।
এস্টেটের ভেতর দিয়ে চলে গেছে অসংখ্য পায়ে চলা পথ, সবুজ মাঠ, জলাশয় ও বনভূমি। মূল রাস্তা থেকে সরে গেলে দেখা মিলবে হরিণের। পুকুরের উপরে আছে ব্রিজ। ব্রিজ পেরোলে কটেজ। আশরিজের ব্লুবেল অরণ্যে আলো-ছায়ার খেলা প্রত্যেক বসন্তে এস্টেট সাজে নতুন রূপে।
এস্টেটের বনভূমি ঢেকে যায় বেগুনি-নীল ব্লুবেলের কার্পেটে। বসন্তের কয়েক সপ্তাহ এখানে ব্লুবেলের রাজত্ব চলে। এস্টেটের ডকি উড অংশে ব্লুবেলের দেখা পাওয়া যায়। দীর্ঘ গাছের সবুজ পাতার পটভূমিতে নীল ব্লুবেলের বৈপরীত্য অপার সৌন্দর্য নিয়ে ধরা দেয়।