হাওড়া – তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা। তৃষ্ণায় বুক ফেটে গেলেও মিলছে না এক ফোঁটা জল! এতদিন মাত্র একবার করে জল সরবরাহ করা হলেও গত কয়েকদিন ধরে সেটাও বন্ধ। এমনই ভয়াবহ পরিস্থিতি লিলুয়ার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে। জলকষ্টে জেরবার স্থানীয় বাসিন্দারা সোমবার দুপুরে পটুয়াপাড়া এলাকায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান।শেষে লিলুয়া থানার পুলিস ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
বালি পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের পটুয়াপাড়া, ভুজঙ্গ দাস রোড সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় কয়েক হাজার পরিবারের বাস। এখানে পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অনিয়মিত জল পাওয়ার কষ্ট সহ্য করে আসছিলেন এখানকার বাসিন্দারা। আগে দিনে তিন বেলা জল পেলেও গত কয়েক মাস ধরে দিনে মাত্র একবার করে জল পাচ্ছিলেন তাঁরা। গরম বাড়তেই দুপুরের দিকে জল সরবরাহের সময়সীমা মাত্র দশ মিনিটে এসে ঠেকেছে। পরিবার পিছু এক বালতি জলও মিলছে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সমস্যার কথা বালি পুরসভাকে বারংবার জানানো হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। এমনকী, প্রাক্তন কাউন্সিলার শোভাদেবী থেকে শুরু করে বালির বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায়ের কাছে জলের দাবিতে বহুবার গিয়েছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু কেউই তাতে সাড়া দেননি বলে অভিযোগ। গত দু’দিন একেবারেই জল না মেলায় ধৈর্যচ্যুতি ঘটে স্থানীয়দের। এদিন দুপুরে বিক্ষোভে নামেন তাঁরা।
স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা আঁখি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কাছেই একটি ক্লাব থেকে বোরিং মেশিনের সাহায্যে জল তোলা হচ্ছে। সেখান থেকেই মিড ডে মিলের রান্না ও বাচ্চাদের জন্য পানীয় জল নিয়ে আসতে হয়েছে। এভাবে স্কুল চালাব কী করে?’ স্থানীয় বাসিন্দা মিতা কোলে, সঞ্জয় দাসরা বলেন, ‘এই গরমে জল না পেলে কী করব? পানীয় জল চড়া দামে কিনে খেতে হচ্ছে। পাড়ার মোড় থেকে বয়স্কদের জল টেনে আনতে হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে লিখিত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছেড়ে কেউ উঠবে না।’ শেষে লিলুয়া থানার পুলিস গিয়ে তাঁদের বোঝান।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভট্টনগর পাম্প হাউস থেকে তিনটি পাম্পের সাহায্যে এতদিন এই এলাকায় জল সরবরাহ করা হতো। সম্প্রতি একটি পাম্প খারাপ হওয়ায় সেটি মেরামতির জন্য কেএমডিএ নিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে দু’টি পাম্পের সাহায্যে জল সরবরাহ হচ্ছে। তাই জলের গতি খানিকটা কমেছে বলে দাবি প্রশাসনের।
