মুখা শিল্পে জোয়ার আনতে বাড়তি নজর প্রশাসনের। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিখ্যাত মহিষবাথানের মুখা শিল্পে জোয়ার আনতে বাড়তি নজর প্রশাসনের, অনলাইন সংস্থার মাধ্যমে মুখা বিক্রিতে সহায়তা করতে উদ্যোগী দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। উল্লেখ যে দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি ব্লকের মহিষবাথান এলাকার মুখাশিল্পীরা কাঠের মুখা বানানো শিল্পের সঙ্গে যুক্ত।
দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার মুখা শিল্পীরা নানা দেব-দেবীর কাঠের তৈরীর মুখা বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। পরবর্তী সময়ে নিজেদের প্রয়োজনের তাগিদে এই এলাকার মুখাশিল্পীরা একত্রিত হয়ে মহিষবাথান গ্রামীণ হস্তশিল্প সমবায় সমিতি লিমিটেড নামক একটি সংস্থা তৈরী করে। মহিষবাথানের মুখা শিল্পীদের দ্বারা তৈরী এই মুখার চাহিদা শুধু যে জেলা বা রাজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তা নয়, ক্রেতার পছন্দ অনুযায়ী এখানকার তৈরী মুখা পাড়ি দিত দিল্লী, মুম্বাই, বাঙ্গালোরেও।
তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ক্রেতারা ফোন করে মুখার অর্ডার দিত। স্থানীয় সূত্রে খবর মহিষবাথান সহ কুশমন্ডি এলাকায় রয়েছে ২০০-২৫০ জন মুখাশিল্পী। যারা মুখা তৈরী করেই প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকা আয় করত। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে বিগত প্রায় ২ বছর ধরে চলা কোভিড আবহে মহিষবাথানের মুখা শিল্প ধুকছিল। এরপর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন মহিষবাথানের মুখা শিল্পের বাজার চাহিদা বাড়ানোর লক্ষ্যে তথা তৈরী মুখা অনলাইন মাধ্যমে বাজারে বিক্রির জন্য উদ্যোগী হয়।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলা শাসক আয়েশা রানি এ সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা নিজে কুশমন্ডির মহিষবাথানে পরিদর্শনে যান। বিশেষজ্ঞ চিত্র গ্রাহকের মাধ্যমে মহিষবাথানের তৈরী মুখার ক্যাটালগ তৈরীতে উদ্যোগ শুরু হয়। শুধু তাই নয় অনলাইনে মুখা বিক্রির জন্য এবং বিভিন্ন মেলায় প্রদর্শনী চলাকালীন জেলার মুখা শিল্পীরা যাতে তাদের তৈরী মুখার ছবি ক্রেতাদের দেখাতে পারে তার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহিষবাথান গ্রামীণ হস্তশিল্প সমবায় সমিতি লিমিটেড সংস্থাকে ল্যাপটপ-ও প্রদান করা হয়। সূত্র মারফৎ এও খবর মহিষবাথানের মুখা শিল্পের বাজার চাহিদা বাড়াতে মুখা শিল্পীদের ধারনার উন্নতির জন্য ডিজাইন সেমিনার-ও আয়োজনের কথা ভাবছে প্রশাসন।
আর ও পড়ুন নন্দীগ্রাম দিবসে টুইটে ২০০৭-র ঘটনা স্মরণ করলেন মমতা
মহিষবাথান গ্রামীণ হস্তশিল্প সমবায় সমিতি লিমিটেড-এর সম্পাদক পরেশ চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন প্রশাসনিক সহায়তায় অনলাইনে মুখা বিক্রির প্রস্তুতি চলছে। তিনি জানিয়েছেন ফ্লিপকার্ট, এমাজন-এর মত অনলাইন সংস্থাগুলির মাধ্যমে মুখা বিক্রি শুরু হলে তাদের তৈরী মুখার আরও চাহিদা বাড়বে। তাদের মতে চাহিদা বাড়লে মুখা শিল্পীদের দিন পিছু আয় ৫০০-৬০০ টাকা থেকে বেড়ে আয় ১০০০ টাকাও হতে পারে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলা শাসক আয়েশা রাণি এ বলেন অনলাইনে বিক্রি করার সূযোগ পেলে মুখা বিক্রি বাড়বে, বিক্রি বাড়লে জিনিসের ডিজাইন বাড়বে। তিনি বলেন আমরা লোকশিল্পও ধরে রাখতে পারব এবং মুখা শিল্পীদের আয়ও বাড়বে।