শালবনি – আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে হেলিকপ্টার নামবে শালবনীতে। অনুষ্ঠান স্থলে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। আশপাশে কৌতূহলি লোকজনের জটলা। সেখানেই একটা চায়ের দোকানে বসেছিলেন লক্ষ্মীকান্ত রানা। তিনি বললেন, পাওয়ার প্লান্ট হলে অনেকে কাজ পাবেন। আমরা খুব খুশি। সেই খুশিতে আজ মাংস-ভাত হবে।২০০৭ সালে বাম আমলে জিন্দালদের কারখানার জন্য দেড় বিঘা জমি দিতে হয়েছিল লক্ষ্মীকান্তকে। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরও কারখানা না হওয়ায় হতাশা গ্রাস করেছিল লক্ষ্মীকান্ত ও তাঁর মতো অনেক জমিদাতা পরিবারকে। সেই হতাশা বোধহয় এবার কাটতে চলেছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ফুল, মিষ্টি নিয়ে তৈরি শালবনী জমিহারা কমিটি। কমিটির সদস্যরা আশাবাদী কারণ, সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধনের সময়েও মুখ্যমন্ত্রী এসেছিলেন। সেই কারখানা বাস্তবায়িত হয়েছে। এলাকার বেকার যুবকরা কাজ পেয়েছেন। এলাকার অর্থনীতির হাল ফিরেছে। এবারও তাই নয়া স্বপ্ন দেখছেন লক্ষ্মীকান্তর মতো অনেকেই।জমিহারা কমিটির সম্পাদক পরিষ্কার মাহাত বলেন, আন্দোলন ভুলে আমরা এই অনুষ্ঠানের জন্য মুখিয়ে আছি। তবে কিছু সমস্যা রয়েছে, সেইসব কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে চাই। প্রসঙ্গত, ২০০৭ সাল থেকেই শিল্পের স্বপ্ন দেখছে শালবনীর মানুষ। কিন্তু তাঁদের স্বপ্ন আর পূরণ হচ্ছিল না। বাম আমলে জিন্দালদের বৃহত্তম ইস্পাত কারখানা তৈরির পরিকল্পনা হয়, প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ জমিদান করেছিলেন। জিন্দালরা সরকারি, রায়তি, পাট্টা জমি মিলিয়ে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে। ২০০৮ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সেই কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে শালবনীতে এসেছিলেন। ফেরার পথে তাঁর কনভয়ে মাওবাদীদের মাইন ব্লাস্ট হয়। এই ঘটনার পর কারখানা তৈরি বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৪ সালে স্থানীয়রা কারখানার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। সেই আন্দোলনের ফলে ২০১৬ সাল নাগাদ শালবনীতে অধিগৃহীত জমির উপর একটি সিমেন্ট কারখানা তৈরি হয়। তবে তারপরেও অধিগৃহীত জমির প্রায় ৮০ শতাংশ পড়ে রয়েছে।
