হাওড়া – এ যেন উলটোচিত্র! যেখানে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস বা অন্তত শ্মশান কমিটির দপ্তর থেকে মৃতদেহ দাহের সার্টিফিকেট পাওয়ার কথা, সেখানে তা মিলছে মুদি দোকান থেকে! এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার আন্দুল গ্রাম পঞ্চায়েতে। অভিযোগ, আন্দুল মহাশ্মশান কমিটির তরফে দাহের পর যে সনদ দেওয়া হয়, তা জনৈক নিমাই সাধুখাঁর মুদি দোকান থেকেই বিতরণ করা হচ্ছে—এমনকি পঞ্চায়েত অফিস ও ওই দোকানে বিষয়টি জানিয়ে নোটিশও সাঁটানো রয়েছে।
নোটিশে স্পষ্ট করে লেখা—সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত ন’টার মধ্যে ওই দোকান থেকেই মিলবে মৃত্যু সনদ। এতে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দারা। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—কেন সরকারি নথি দেওয়া হচ্ছে মুদি দোকান থেকে?
আরও গুরুতর অভিযোগ, বিনা মূল্যে এই সনদ মিলছে না। অফিসিয়ালি ২০ টাকা এবং আনঅফিসিয়ালি নেওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ স্পষ্ট দুর্নীতি চলছে বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।
এই অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের হেনস্তার মুখে পড়তে হয়। অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান তাঞ্জিলা তরফদারের ঘনিষ্ঠজনেরা সংবাদমাধ্যমের উপর চড়াও হন। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে:
সাদা জামা: প্রদীপ মাখাল
সাদা জামার পেছনে হলুদ গেঞ্জি: বাপী
হলুদ স্কাই গেঞ্জি ও চশমা: উপপ্রধান পরেশ দাস
এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলেও। তৃণমূল বিধায়ক প্রিয়া পাল ঘটনার নিন্দা করে তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্যদিকে বিজেপি নেতা উমেশ রাই কটাক্ষ করে বলেন, “এই ঘটনায় আশ্চর্যের কিছু নেই, এমনটাই হয়ে আসছে।”
মুদি দোকানে সরকারি নথি বিলি, তাতে দুর্নীতি, আর সংবাদমাধ্যমকে হেনস্তা—সব মিলিয়ে আন্দুলে চলছে চূড়ান্ত প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা। এখন দেখার, এই ঘটনায় আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না।




















