মোগলমারির বৌদ্ধ মহাবিহারকে সংরক্ষণের জন্য বরাদ্দ অর্থ নয়ছয়, সরব এলাকাবাসী। পশ্চিমবঙ্গের এক ঋদ্ধ ঐতিহ্য বহন করছে একটি অতি পরিচিত প্রত্নক্ষেত্র মোগলমারি। আর সেই দাঁতন-১ ব্লকের মোগলমারির বৌদ্ধ মহাবিহারকে কেন্দ্র করে পর্যটন সার্কিট সহ অন্যান্য দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বারবার শরণাপন্ন হয়েছেন দাঁতন বিধানসভার বিধায়ক বিক্রম চন্দ্র প্রধান। মোগলমারির বৌদ্ধ মহাবিহার সংরক্ষণের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী অর্থের তছরুপ হয়েছে এই অভিযোগে সরব হলেন বিধায়ক।
এরই প্রতিবাদে মনোহরপুর ৩নং অঞ্চল যুব তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে মোগলমারির বৌদ্ধবিহার সংলগ্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হলো বিশাল প্রতিবাদ সভা। প্রধান বক্তা ছিলেন দাঁতন বিধানসভার বিধায়ক বিক্রম চন্দ্র প্রধান। উপস্থিত ছিলেন দাঁতন-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রতুল চন্দ্র দাস, মনোহরপুর ৩নং অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বামাপদ মিশ্র, মনোহরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সতীশচন্দ্র দোলাই এবং তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক ও অঞ্চলের অন্যান্য নেতৃত্বগণ।
প্রসঙ্গত ২০১৩ সালের ৭ই মার্চ মোগলমারি প্রত্নস্থলকে রাজ্য সংরক্ষিত সৌধের মর্যাদা প্রদান করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর। ২০১৫ সালের ২৩শে মার্চ এই বৌদ্ধবিহার সংরক্ষণের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর কর্তৃক বরাদ্দ হয় ২ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা। এই বৌদ্ধবিহারের যাবতীয় কাজ প্রথম থেকেই দেখভাল করতো মোগলমারী তরুণ সেবা সংঘ ও পাঠাগার নামের স্থানীয় একটি ক্লাব। ২০১৬ সালের ৪ঠা অক্টোবর এই ক্লাব কমিটির পরিবর্তন হয় এবং নতুন কমিটি যাবতীয় দায়িত্বভার গ্রহণ করে।
২০১৯ সালের ২৮ শে মে পূর্ত দপ্তর ‘কেলটেক’ নামক কলকাতার একটি কোম্পানিকে প্রত্নস্থল সংরক্ষণের দায়িত্ব দেয়। যার টেন্ডারের মূল্য ছিল ২ কোটি ৪৫ লক্ষ ৪৬৮ টাকা। ঠিকাদার সংস্থাটির সঙ্গে তরুণ সেবা সংঘ ও পাঠাগার –এর বর্তমান কমিটির কর্তৃপক্ষ এই কাজ তদারকি করে প্রায় দু’বছরের অধিক সময় ধরে। বিধায়কের অভিযোগ বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিকভাবে ব্যবহার না হয়ে অর্থ তছরুপ হয়েছে। বিধায়ক বলেন – আমাদের গৌরব ও গর্বের বিষয় মোগলমারির বৌদ্ধ মহাবিহারকে নিয়ে এই দুর্নীতি,ভ্রষ্টাচার মেনে নেওয়া যায় না।এর শেষ দেখে ছাড়বো! যা নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ।
আজকের এই প্রতিবাদ সভায় এলাকার অসংখ্য মানুষ অংশগ্রহণ করেন এবং আগামী সোমবার দাঁতন-১ সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক-এর নিকট এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি অভিযোগপত্র প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এলাকার মানুষের আবেগের সঙ্গে যুক্ত বিষয়টিকে নিয়ে যারা যেভাবে ছেলেখেলা করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক বিক্রম চন্দ্র প্রধান।