মোদীরাজ্যের বিধানসভায় বিবিসির বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ, গুজরাত বিধানসভায় এই প্রস্তাবের উপর ২ ঘণ্টা আলোচনা হয়। তার পর ধ্বনিভোটে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবটি পাশ করানো হয়। প্রস্তাবে বিবিসির বিরুদ্ধে তথ্যবিকৃতির অভিযোগ আনা হয়েছে। বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র নিয়ে উত্তাপ কমার লক্ষণ নেই। উল্টে তা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতের বিধানসভায় পাশ হয়ে গেল বিবিসির বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাব। ওই প্রস্তাবে মোদীকে নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রে তথ্যবিকৃতি ঘটানোর জন্য বিবিসির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকারের কাছে।
শুক্রবার মোদী রাজ্যের বিধানসভায় দু’ঘণ্টা আলোচনার পর ধ্বনিভোটে প্রস্তাবটি পাশ হয়। প্রস্তাব সমর্থন করেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সিঙ্ঘভি, বিজেপি বিধায়ক অমিত ঠক্কর, ধবলসিন জালা এবং মনীষা ভাকিল। পরে সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘এই তথ্যচিত্রটি শুধু প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে নয়, ১৩৫ কোটি ভারতীয়েরও বিরোধী।’’ প্রস্তাব পেশের সময় বিজেপি বিধায়ক বিপুল পটেল দাবি করেন, ভারত এবং ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বিবিসির গোপন উদ্দেশ্য রয়েছে। গুজরাত বিধানসভায় শুক্রবার কংগ্রেস বিধায়করা ওয়াকআউট করেন। তার পরেই বিবিসি নিয়ে প্রস্তাব পাশ করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। যে সময় এই প্রস্তাবটি পাশ করানো হচ্ছিল, তখন অধিবেশন কক্ষে কোনও বিরোধী বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন না।
আরও পড়ুন – সবুজ পাঞ্জাবি পড়ে দিল্লি থেকে কিসের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ কেষ্টর?
গত জানুয়ারি মাসে ২০০২ সালে গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে দুই পর্বের একটি তথ্যচিত্র সম্প্রচার করে বিবিসি। কিন্তু সেই তথ্যচিত্রের প্রথম পর্বটি ভারতে নিষিদ্ধ করে কেন্দ্রীয় সরকার। অভিযোগ, তথ্যচিত্রের প্রথম পর্বে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোদীকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে খারাপ ভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক এই তথ্যচিত্রকে ‘প্রোপাগান্ডা’ হিসাবে চিহ্নিত করে। টুইটার, ইউটিউবের মতো সমাজমাধ্যম থেকে তথ্যচিত্রের সমস্ত চিহ্ন নামিয়ে ফেলার ফরমানও জারি করে মোদী সরকার। তা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। বিরোধীরা ওই ‘নিষিদ্ধ’ তথ্যচিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ঘটনাচক্রে, জানুয়ারিতে এই তথ্যচিত্র প্রকাশিত হয়। ফেব্রুয়ারিতে আয়কর ফাঁকি দেওয়ার মামলায় আয়কর হানা হয় বিবিসির দিল্লি এবং মুম্বইয়ের দফতরে। এ বার সেই তথ্যচিত্রের জেরেই গুজরাত বিধানসভায় পাশ করানো হল বিবিসি বিরোধী প্রস্তাব।