যাত্রীদের ট্রেনের কামরায় উঠতে বাধা দেবার অভিযোগে উতপ্ত শ্যামনগর স্টেশন চত্বর। যাত্রীদের ট্রেনের কামরায় উঠতে বাধা দেবার অভিযোগ উঠল তৃনমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রিতিমত তুলকালাম কান্ড ঘটল শিয়ালদহ মেইন শাখার শ্যামনগর স্টেসন চত্বরে। তৃনমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, কোলকাতার সমাবেশে যোগ দিতে যেতে বাধা দেবার চেষ্টা করেছিল বিজেপি আশ্রিত কিছু লোকজন।
যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,এদিন সকাল ১০.২০ মিনিটের কল্যানী সুপার ধরে তৃনমূল ছাত্র পরিষদের সভায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন নদীয়ার গয়েশপুরের ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। ওই ট্রেনটি ১০.৪৫ মিনিট নাগাদ শ্যামনগর স্টেসনে পৌঁছাতেই শুরু হয় গন্ডগোলের সুত্রপাত। অভিযোগ, কামরার গেট আটকে নিত্য যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে বাধা সৃষ্টি করে তৃনমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনের কামরা গেট বন্ধ করে তৃনমুলের সদস্যরা নেশাভান করছিলেন। যাত্রীরা বলপূর্বক কামরায় উঠতে গেলে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ থেকে মারপিট বেধে যায়। ওই সময় বেশ কয়েকজন নিত্য যাত্রীকে ধাক্কা মেরে প্লাটফর্মের ওপর ফেলে দেবার অভিযোগ উঠেছে তৃনমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এরপরই ক্ষিপ্ত যাত্রীরা প্লাটফর্মের ওপর বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পাশাপাশি তাদের ওপর মারধোরের অভিযোগ তুলে প্রায় আধঘন্টা রেল লাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় তৃনমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রেল পুলিশ ও জগদ্দল থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। এর পুলিশের হস্তক্ষেপেই অবরোধ উঠে যায়।
আরও পড়ুন – বনদপ্তরের অনুমতি না নিয়ে শিক্ষা দপ্তর কাটল বিরাট অশ্বত্থ গাছ, চাঞ্চল্য রায়গঞ্জে
সপ্তাহের প্রথম দিনের ব্যাস্ততম সময়ে অবরোধের জেরে চরম ভোগান্তির শিকার হন নিত্য যাত্রীরা। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃনমুলের এক ছাত্র নেতা সৈকত দাসের অভিযোগ, আমারা সমাবেশে যোগ দিতে শান্তিপুর্ন ভাবে কল্যানী সুপারে চড়ে যাচ্ছিলাম। শ্যামনগর স্টেসনে ট্রেন ঢুকতেই স্টেশন সংলগ্ন অঞ্চলের ২০০ থেকে ৩০০ জন বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের কামরা ঘেরাও করে জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে থাকে। এরপর ওরা আমাদের ছাত্রদের লাঠি দিয়ে মারধোর করে।
তৃনমুলের দলীয় ফ্লাগ ছিঁড়ে দেয় এবং ফ্লাগের লাঠি দিয়েও বেশ কয়েকজন ছাত্রকে পেটায়। এমনকি আমাদের সঙ্গে থাকা মেয়েদেরকে লক্ষ্য করে তারা অভব্য আচরন করে। তার দাবি,আমরা যাতে সমাবেশে যোগ দিতে না পারি তাই বিজেপি চক্রান্ত করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রেল পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এদিকে জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম বলেন, মনে হচ্ছে বিজেপির কিছু দুষ্কৃতীরা ট্রেনের ভেতরেই ছিল। শ্যামনগর স্টেসন আসতেই ওরা আমাদের ছাত্রদের মারধোর করেছে।
জোর করে ওরা আমাদের ছাত্রদের ট্রেন থেকে নামানোর চেষ্টাও করেছে। এমনকি বেল্ট দিয়েও ওদের পেটানো হয়েছে। তার দাবি,ফুটেজে সেই দৃশ্য দেখা গেছে। যে এই কাজ করেছে তাকে চিহ্নিতও করা হয়েছে। তার কথায় এটা সম্পূর্ণ বিজেপির চক্রান্ত। পুলিশকে বলা হয়েছে ব্যবস্থা নিতে। তাছাড়া রেল পুলিশের কাছেও আমরা লিখিত অভিযোগ জানাব।