ঘূর্ণিঝড় ( Storm ) ও বন্যার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। পুরো যুক্তরাষ্ট্রে জলবায়ু-সম্পর্কিত নানা বিপর্যয় অব্যাহত রয়েছে এবং দেশটি এই বিপর্যয়কে ‘জীবন-মৃত্যুর সংকট’ হিসেবে বিবেচনা করছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এবারে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ( Storm ) মোকাবিলায় ‘ঐতিহাসিক বিনিয়োগ’ প্রয়োজন হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি ও নিউ জার্সিতে অভূতপূর্ব মাত্রায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেসব অঞ্চলের কিছু বাসিন্দা জলবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ছয়টি মার্কিন অঙ্গরাজ্যে দুর্যোগের ( Storm ) কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। নিউ জার্সির গভর্নর ফিল মারফি জানিয়েছেন—অঙ্গরাজ্যটিতে অন্তত ২৩ জন মারা গেছে, যাদের বেশির ভাগই জল বেড়ে যাওয়ার পর গাড়ির ভেতরে আটকা পড়ে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া নিউ ইয়র্ক শহরে দুই বছর বয়সী একটি শিশুসহ অন্তত ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছে। যাদের মধ্যে ১১ জনের বাড়ির বেজমেন্টে জলবন্দি অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।
এ ছাড়া পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়ায় পাঁচ জন এবং কানেটিকাটে অঙ্গরাজ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ম্যারিল্যান্ড ও ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যেও মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে এত ব্যাপক মাত্রায় ঝড় হওয়ার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কতটা, তা এখনও স্পষ্ট না হলেও বিজ্ঞান বলছে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়লে তার আশপাশের বাতাস উষ্ণতর হয়ে ওঠে এবং হারিকেন, সাইক্লোন ও টাইফুন হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে এ ধরনের দুর্যোগের সঙ্গে ভারী বর্ষণের আশঙ্কাও তৈরি হয়।
শিল্পযুগ শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্ব এরই মধ্যে প্রায় এক দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতর হয়েছে। এবং এই তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে যদি না বিশ্বের দেশগুলোর সরকার কার্বনসহ ক্ষতিকর গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা ব্যাপক হারে হ্রাস না করে।
আর ও পড়ুন ফিরে দেখা প্রয়াত অভিনেতা সিদ্ধার্থ -র জীবন ( Life )
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র বিল ডে ব্লাসিও বলেছেন, ‘আমাদের মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছানো উচিত যে—আক্ষরিক অর্থেই সবদিক থেকে পরিস্থিতির অবনতি হবে।’ এ ছাড়া নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচাল বলেছেন : ‘আমাদের কোনো ধারণাই ছিল না যে—(গত বুধবার) রাত ৮টা ৫০ থেকে ৯টা ৫০ মিনিটের মধ্যে আক্ষরিক অর্থে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি হবে এবং নায়াগ্রা জলপ্রপাতের মতো জল নিউইয়র্কের রাস্তায় চলে আসবে।’
বন্যায় নিউইয়র্কের সাবওয়ে স্টেশনগুলোতে জল উঠে যাওয়ায় অনেক স্টেশন বন্ধ ছিল এবং কিছু অংশে সাবওয়ে চলাচলও বন্ধ ছিল। কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে নিউইয়র্কের রাস্তায় গাড়ি ভেসে যাচ্ছে, এবং গাড়ির ভেতর থেকে সাহায্যের জন্য চিৎকারও শোনা যাচ্ছিল। কোনো কোনো জায়গায় বাস, উড়োজাহাজ ও ট্রেনের যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় আটকে থাকতে হয়েছে। নিউইয়র্কের পুলিশ লোকজনকে রাস্তায় না যেতে পরামর্শ দিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিন বিভাগ জানিয়েছে, নগরীর নানা প্রান্ত থেকে আসা সাহায্যের আবেদনে তাদের সাড়া দিতে হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় আইডা গত রোববার লুইজিয়ানায় আঘাত হানার পর যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল ধরে উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এই ঘুর্ণিঝড়টি ছিল ক্যাটাগরি চার মাত্রার। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লুইজিয়ানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।