যুদ্ধভূমি ইউক্রেনে আটকে শিলিগুড়ির একাধিক ডাক্তারি পড়ুয়ারা, সন্তানদের দেশে ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন অভিভাবকদের। যুদ্ধভূমি ইউক্রেনে আটকে শিলিগুড়ির একাধিক ডাক্তারি পড়ুয়ারা। ভারতীয় দূতাবাসের বিরুদ্ধে লাগাতার অসহযোগিতার অভিযোগ অসহায় পড়ুয়া ও অভিভাবকদের।
রাজ্যের পড়ুয়াদের ফেরাতে তৎপর রাজ্য সরকার। দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই আটকে থাকা পড়ুয়াদের অভিভাবকদের ফোন করে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে ডেটাবেস তৈরি করা হয়েছে জেলাশাসকের দপ্তর থেকে। রাজ্যের তরফে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে তাদের। শিলিগুড়িতে দুই ডাক্তারি পড়ুয়া প্রীতম মালাকার ও বিশাল সাহা আটকে রয়েছে ইউক্রেনে।
প্রীতম ওই দেশের পোলটাবার স্টেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া।শিলিগুড়ি পুরনিগমের ১৬ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। শনিবার দুপুর ৩.০৬নাগাদ বাবা মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা হয় প্রীতমের। ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রীতম জানায় দুপুর পর্যন্ত শহরের কেন্দ্র পোলটাবায় সেধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। জল, খাবার মজুদ রয়েছে কিছু তবে বেশিক্ষণ আর এই সঞ্চয় দিয়ে চলবে না।
আর এরপরই ফের সন্ধ্যায় ভিডিও কলে সে তার পরিবারকে জানায় প্রাণ বাঁচাতে আবাসনের সমস্ত আলো বন্ধ করে সকলকে কালো পোশাক পরিধান করে থাকার নির্দেশ দিয়েছে ইউক্রেন মিলিটারি। সতর্ক করা হয়েছে সাইরেন বেজে উঠলেই ব্যাংকারে ছুটে স্থানান্তরিত হতে হবে তাদের। এরপর থেকেই ছেলের দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়েছেন মা মৌসুমী মালাকার ও বাবা চিকিৎসক পীযুষ কান্তি মালাকার।
তারা জানান ভারতীয় দূতাবাসের তরফে কোনরকম সহায়তা মিলছে না। কঠিন পরিস্থিতিতে ওদেশে আটকে থাকা এদেশের পড়ুয়াদের সঙ্গে কোনরকম যোগাযোগ পর্যন্ত করছে না ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকেরা। এদিকে সকাল থেকেই শিলিগুড়ির ৩৮নাম্বার ওয়ার্ডের ডাক্তারি পড়ুয়ার বিশাল সাহার বাড়িতে চাপা আতঙ্ক ঘিরে রয়েছে।
আর ও পড়ুন পুরভোটের আগে জোর কদমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
খারকিভের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাক্তারি পড়ুয়া বিশালের সঙ্গে নেটওয়ার্কের সমস্যার জন্য অধিকাংশ সময়েই যোগাযোগ করে উঠতে পারছেন না তার বাবা মা।খারকিভে দু’দিনব্যাপী ক্রমাগত গুলি আওয়াজ আর বোমার শব্দে প্রাণ হাতে নিয়ে রয়েছে তাদের সন্তান। এই দুই পরিবারের সঙ্গেই এদিন দেখা করেন শিলিগুড়ি পুরো নিগমের মেয়র গৌতম দেব।
মেয়রের কাছে তাদের কাতর অনুরোধ যেভাবেই হোক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেন সন্তানদের ফিরিয়ে আনেন। কারণ ভারতীয় দূতাবাস পড়ুয়াদের সঙ্গে কোনো রকম সহায়তা করছে না, কঠিন পরিস্থিতিতে কোনরকম আশ্বাসটুকু মিলছে না তাদের। মেয়র জানান রাজ্য জেলা প্রশাসন যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নিচ্ছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে আমি এই দুই পরিবারের আটকে থাকা পড়ুয়াদের যাবতীয় তথ্য রাজ্যের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করছি।