যোগ্য হয়েও আবাস যোজনায় নিজের নাম বাদ দিলেন দিনমজুর পঞ্চায়েত প্রধান। আবাস যোজনায় অযোগ্যদের নাম থাকা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সাথে পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও খন্ডঘোষ, আউশগ্রাম, গলসি সহ একাধিক ব্লকে আবাস যোজনায় দুর্নীতির প্রমান প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের আবাস যোজনা এবং আবাস যোজনা প্লাস প্রকল্পে স্বজন পোষন, বাড়ি দেওয়ার পরিবর্তে মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়া, বিরোধী রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিজেপি কর্মীরা যোগ্য হলেও তাদের নাম বাদ দেওয়া সহ একাধিক দুর্নীতিতে যুক্ত রাজ্যের শাসক দল। দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে পুনরায় প্রশাসনিক ভাবে সার্ভে করা হচ্ছে তালিকা অনুযায়ী। সার্ভেতে গিয়ে গরমিল দেখে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে অনেক আবেদনকারীর। এই অবস্থায় সম্পূর্ন উল্টো চিত্র দেখা গেল রায়না ১ ব্লকের নারুগ্রাম পঞ্চায়েতে। ওই পঞ্চায়েতের প্রধান চাঁদু সিং পেশায় দিনমজুর। তার বাড়ি বলতে কোনরকম মাথা গোঁজার একটি ঠাঁই রয়েছে তাও একেবারেই ভগ্ন দশায় ।
কিন্তু তবুও গ্রামের বহু যোগ্য ব্যক্তিদের কথা চিন্তা ভাবনা করে তিনি আবাস যোজনার তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ দিয়েছেন। তার কথায়, আবাস যোজনার তালিকায় তার নাম এসেছিল। কিন্তু অনেক ভেবেই তিনি একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে তার নাম বাদ দিয়েছেন। কারন, নারুগ্রাম পঞ্চায়েতের ২৯০০ জনের নাম এসেছিল প্রথম আবাস যোজনার তালিকায়। এরপর ১৮০০ জনের নাম আসে। আশা কর্মীরা সার্ভে করার পর ১৪২৫ জনকে ঘর পাওয়ার যোগ্য বলে গণ্য করা হয়। এরপর দেখা যায় গ্রামে এখনো পর্যন্ত প্রচুর ঘর পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তি রয়েছেন যারা কিন্তু এখনো ঘর পাননি।
আরও পড়ুন – আর্জেন্টিনার ‘তিন তারা’ লোগো উন্মোচন
এ আগে যাতে পঞ্চায়েতে প্রধানের আগে সাধারণ মানুষ ঘর পায় সেই জন্যই নিজের নাম আবাস যোজনার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন তিনি। তিনি মনে করেন তিনি একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে আবাস যোজনার তালিকায় তার নাম থাকবে অথচ আরও অন্যান্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম থাকবে না এটা হতে পারে না। বর্তমানে তিনি দিনমজুর পেশার সঙ্গে যুক্ত, সংসারে অভাব। নিজে বাড়ি কবে করতে পারবেন সেটাও তার অজানা। তবু একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে তার এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে প্রসংশার যোগ্য এবং অন্যদের কাছে দৃষ্টান্তও বটে।