রঙিন প্রজাপতির সঙ্গে উড়চ্ছে এই পাহাড়ি গ্রামও। প্রজাপতি প্রজাপতি/কোথায় পেলে ভাই এমন রঙ্গিন পাখা’! লিখেছিলেন নজরুল। আমাদের চারপাশে উড়ে বেড়ানো এই পতঙ্গের জীবজগতে বিরাট ভূমিকা রয়েছে। কত রকমের পতঙ্গ আমাদের এই এলাকায় রয়েছে, তাদের বর্তমান পরিস্থিতি কী, নতুন কোন প্রজাতির খোঁজ মিলল কি না?– এসব জানতে কালিম্পং জেলার গরুবাথান ব্লকের সামসিং-এর পাহাড়ি গ্রাম সুন্দরী বস্তিতে শুরু হয়েছে ৫ দিনের প্রজাপতি ও মথ পর্যবেক্ষণ শিবির।
উত্তরবঙ্গের পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ‘হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন’ সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত এই শিবিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজ্যের ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার টি. আর. প্রধান। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল (উত্তরবঙ্গ) উজ্জ্বল ঘোষ, প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ যুধাজিৎ দাশগুপ্ত, রুদ্রপ্রসাদ দাস, অংশুমান রাহা, ফুল বিশেষজ্ঞ শুভদীপ সেন, নেওড়া ভ্যালি লোয়ার রেঞ্জের এস.এস. গিরি-সহ অন্যান্যরা।
আরও পড়ুন – প্রবল বর্ষণ মালদায়-খুশির ঈদে অখুশি রইলেন মুসলিম সম্প্রদায়!
উদ্বোধন করে টি. আর. প্রধান বলেন, পর্যটকেরা বড় প্রাণী দেখতে উত্তরবঙ্গে আসেন। কিন্তু, প্রজাপতিও যে পর্যটকদের সমান ভাবে আকর্ষণ করতে পারে সেজন্যও বনবিভাগ বিশেষ চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য এরকম শিবিরের গুরুত্ব দেয়। প্রজাপতি ও অন্যান্য কীট পতঙ্গদের সম্পর্কে জানতে এই শিবিরের ভুমিকা রয়েছে। উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ছোট ছোট কীটপতঙ্গ এই জীবজগতে বিরাট ভূমিকা পালন করে। পর্যটকদের আকর্ষণও করে। এজন্য বন দপ্তরের বক্সা ও গরুমারায় দুটি প্রজাপতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র আছে। আরও পর্যবেক্ষণ বাড়াতে বন দফতর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ যুধাজিৎ দাশগুপ্ত বলেন, মথ, প্রজাপতি, মাছি-সহ ছোট কীটপতঙ্গদের আমাদের জীববৈচিত্র্যে ভূমিকা রয়েছে। প্রজাপতি, মৌমাছি ফুলের পরাগমিলনে ভূমিকা পালন করে। মাছি মৃত জৈব বস্তুকে দ্রুত মাটিতে মিশিয়ে দেয়। আমাদের এই দিকে ভুটান গ্লোরি, গর্গন, মর্মর-সহ প্রায় ৪০০ প্রজাতির প্রজাপতি দেখা যায়।
পৃথিবীতে প্রায় ১৮০০০ প্রজাতির প্রজাপতি ও ১.৬০ প্রজাতির মথ দেখা যায়। এখানে আরও কোনও প্রজাতির প্রজাপতি আছে কিনা, সেটা খোঁজার জন্যই এই শিবির। আয়োজক সংস্থার কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, এটা দ্বিতীয় শিবির। প্রথমটি হয়েছিল বক্সায়। দ্বিতীয় পাঁচদিবসীয় শিবির শুরু হল। ২৫ জন এই শিবিরে যোগ দিয়েছেন। ৪ মে পর্যন্ত এই শিবির চলবে।