নিজস্ব সংবাদদাতা ১২ অক্টোবর ২০২০ নয়াদিল্লি :প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজমাতা বিজয়া রাজে সিন্ধিয়ার জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১০০ টাকার স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করেছেন।

রাজমাতার জন্ম শতবার্ষিকীতে তিনি তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। তিনি বলেছেন, রাজমাতা বিজয়া রাজে সিন্ধিয়াজীর সম্মানে ১০০ টাকার বিশেষ স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করার সুযোগ পেয়ে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছেন। বিজয়া রাজেজীর বইটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঐ বইটিতে গুজরাটের তরুণ নেতা হিসাবে তাঁর কথা উল্লেখ আছে আর আজ, এত বছর পর তিনি দেশের প্রধান সেবকের দায়িত্ব পালন করছেন।
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যাঁরা ভারতকে সঠিক দিশায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, রাজমাতা বিজয়া রাজে সিন্ধিয়া তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারতেন এবং একজন দক্ষ প্রশাসকও ছিলেন। বিদেশি বস্ত্র পুড়িয়ে দেওয়া, দেশে জরুরি অবস্থা জারি ও রাম মন্দির আন্দোলন – তিনি ভারতীয় রাজনীতির প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের সাক্ষী। বর্তমান প্রজন্মকে রাজমাতার জীবন সম্পর্কে জানানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা জানা সকলেরই প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রাজমাতা কিভাবে জনসেবা করতে হয়, তা আমাদের শিখিয়েছেন। এর জন্য কোনও একটি নির্দিষ্ট পরিবারে জন্মগ্রহণ করাই জরুরি নয়। দেশের প্রতি ভালোবাসা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সম্মান করা প্রয়োজন। তাঁর জীবনে এই আদর্শ ও চিন্তাগুলি প্রতিফলিত হয়েছে। রাজমাতার হাজার হাজার কর্মচারী, জাঁকজমকপূর্ণ রাজ প্রাসাদ ও জীবনের সবরকমের সুযোগ-সুবিধা ছিল কিন্তু তা সত্ত্বেও দরিদ্র জনসাধারণের আকাঙ্খা পূরণের জন্য ও সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি জনসেবা করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন। মোদী বলেছেন, রাজমাতা দেশের ভবিষ্যতের জন্য আজীবন উৎসর্গ করেছিলেন। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য তিনি তাঁর জীবন অতিবাহিত করেন। রাজমাতা পদ বা সম্মানের জন্য রাজনীতি করেননি।
প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন, যেখানে রাজমাতা বিনম্র চিত্তে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। অটলজী এবং আডবাণীজী একবার তাঁকে জনসংঘের সভাপতি হওয়ার অনুরোধ জানান কিন্তু তিনি একজন সক্রিয় কর্মী হিসাবেই জনসংঘের জন্য কাজ করার পথ বেছে নিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রাজমাতা নিজের নামে পরিচিত হতে ভালোবাসতেন আর যে কোনও কর্মীর মানসিকতা সেটাই হওয়া প্রয়োজন। রাজনীতির মূল বিষয় হওয়া উচিৎ সম্মান, অহঙ্কার নয়। তিনি রাজমাতাকে একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব বলে বর্ণনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনসচেতনতা ও গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে দেশে অনেক পরিবর্তন হয়েছে, অনেক কর্মসূচি ও প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। রাজমাতার আশীর্বাদে দেশ উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজ দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী শক্তি নেতৃত্ব দিচ্ছে। নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য রাজমাতার স্বপ্ন পূরণে সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তিনি এই অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন।