রাজস্থান – রাজস্থানের ঝালাওয়ার জেলায় শুক্রবার সকালে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। জেলার পিপলোদি গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের ছাদ ধসে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৪ শিশুর। আহত ও ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে রয়েছে আরও অন্তত ৬০ জনেরও বেশি ছাত্রছাত্রী।
স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ, স্কুল শুরুর কিছু পরেই হঠাৎ করে শ্রেণিকক্ষের ছাদ ভেঙে পড়ে। সেই সময় পড়ুয়ারা ক্লাসে বসে পড়াশোনা করছিল। মুহূর্তেই চিৎকার ও আর্তনাদে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা, শুরু হয় তৎপর উদ্ধার কাজ।
উদ্ধারে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও প্রশাসন
ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দমকল এবং উদ্ধারকারী দল। জেসিবি-সহ ভারী যন্ত্রপাতি নামিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন জেলা শাসক ও পুলিশ সুপার। তাঁরা ত্রাণ ও উদ্ধার কার্য তদারকি করছেন।
আহতদের চিকিৎসা চলছে জোরকদমে
আহত পড়ুয়াদের মানোহর থানার কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা, মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি চিকিৎসক ও নার্স। প্রয়োজনে কোটা ও জয়পুরে স্থানান্তরের প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।
বৃষ্টিতে দুর্বল পুরোনো ভবনই কি বিপদের কারণ?
প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, স্কুলের ভবনটি বহু পুরোনো এবং সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে ভবনের কাঠামো অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ছাদ ধসের পেছনে সেই দুর্বল পরিকাঠামোকেই দায়ী করছে প্রশাসনিক মহল। তবে ঘটনা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আতঙ্কিত অভিভাবকরা, স্কুল পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন
স্কুল চত্বর ঘিরে এখন শুধুই কান্না, আতঙ্ক আর অপেক্ষা। সন্তানদের খোঁজে ভেঙে পড়েছেন বহু অভিভাবক। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন—এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কীভাবে এখনও ক্লাস চলছিল? প্রশাসনের গাফিলতি নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন স্থানীয়রা।
মুখ্যমন্ত্রীর নজরে ঘটনা
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকেও পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে দ্রুত উদ্ধার ও যথাযথ চিকিৎসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা গোটা রাজ্যকে নাড়িয়ে দিয়েছে। শিশুমৃত্যুর এই খবর যেন রাজস্থানের বুক জুড়ে শোকের ছায়া বিস্তার করেছে। প্রশ্ন উঠছে—এই দুর্ঘটনা কি প্রতিরোধ করা যেত না?
