রাজ্য – অবশেষে বিদায়ের মুখে পশ্চিমবঙ্গের বর্ষা। রবিবার কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর নিশ্চিত করেছে যে, চলতি সপ্তাহের শুরুতেই মৌসুমি বায়ু সরে যাচ্ছে। আজ, সোমবারের মধ্যেই রাজ্যের কয়েকটি অংশ থেকে বর্ষা বিদায় নেবে। আবহাওয়াবিদদের মতে, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই গোটা পূর্ব ভারত থেকে বর্ষাকাল সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যাবে। যদিও বর্ষা বিদায় প্রক্রিয়া কিছুটা দেরিতে শুরু হয়েছে, তবে এবছর তা স্বাভাবিক সময়ের মধ্যেই শেষ হচ্ছে। সাধারণত প্রতি বছর ১০ থেকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে রাজ্য থেকে বর্ষা বিদায় নেয়। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস জানিয়েছেন, আগামী দু’দিনের মধ্যেই গোটা রাজ্য থেকে মৌসুমি বায়ু সরে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
ইতিমধ্যেই আবহাওয়ার পরিবর্তন রাজ্যবাসী টের পাচ্ছেন। কয়েকদিনের মেঘলা আকাশ এখন প্রায় সর্বত্র ঝলমলে রোদে ভরে উঠেছে। দপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী, রবিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট ছাড়া রাজ্যের অন্য কোথাও উল্লেখযোগ্য বৃষ্টি হয়নি। বর্ষা বিদায়ের নির্দিষ্ট কিছু মাপকাঠি রয়েছে— যেমন বৃষ্টি হ্রাস, বায়ুর দিক পরিবর্তন এবং আর্দ্রতার মাত্রা কমে যাওয়া। বর্ষাকালে সক্রিয় দখিনা বাতাস বর্ষা বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে উত্তুরে বাতাসে রূপান্তরিত হয়।
তবে বর্ষা বিদায় মানেই যে বৃষ্টি থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি, তা নয়। অক্টোবর ও নভেম্বর মাস বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়প্রবণ সময় হিসেবে পরিচিত। এই সময় নিম্নচাপ তৈরি হলে তা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে দুর্যোগ সৃষ্টি করতে পারে। যদিও কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, কালীপুজো থেকে ভাইফোঁটা (২৩ অক্টোবর) পর্যন্ত পূর্ব উপকূলের রাজ্যগুলিতে বড় কোনো ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা নেই।
এই সময়ের মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে দুটি নিম্নচাপ তৈরি হলেও তার প্রভাবে মূলত দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক ও কিছুটা পশ্চিম ভারতে বৃষ্টিপাত বাড়বে। তবে ওই নিম্নচাপগুলি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের পর বঙ্গোপসাগরে গঠিত ঘূর্ণিঝড় সাধারণত দক্ষিণ অন্ধ্র বা তামিলনাড়ু উপকূলে গিয়ে আঘাত হানে।
ঘূর্ণিঝড় না হলেও, পুবালি বাতাসের সক্রিয়তা বৃদ্ধি এবং পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে বর্ষা বিদায়ের পরও রাজ্যে আসাময়ের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়ে যায়। এই আসাময়ের বৃষ্টি মাঠের পাকা ধান ও শীতের সবজিতে বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন আবহাওয়া অধিকর্তা।
