রাজ আমলের নিয়ম নিষ্ঠা মেনেই উদ্বোধন হল কোচবিহারের রাস উৎসব। ১৩৩ তম ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবের রাজ আমলের নিয়ম নিষ্ঠা মেনেই উদ্বোধন হল। রাস উৎসবের উদ্বোধন করলেন কোচবিহার জেলাশাসক পবন কাদিয়ান। রাজ আমল থেকে হয়ে আসছে এই রাস উৎসব। ১৮৯০ সালে কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির স্থাপনের পর থেকে এই মদনমোহনের রাস উৎসব হয়ে আসছে।
এই রাস উৎসবের উদ্বোধনে এক সময় কোচবিহারের মহারাজা নিজেই পুজোয় অংশগ্রহণ করতেন এবং কোচবিহার বাসির মঙ্গল কামনা করতেন। বর্তমানে কোচবিহারের জেলাশাসক এই রাস উৎসবের উদ্বোধন করেন এবং কোচবিহার বাসির মঙ্গল কামনায় রাস উৎসবের পুজোয় অংশগ্রহণ করেন। বর্তমানে রাজা নেই তাই এই মন্দিরের দেখাশোনা করেন দেবত্র ট্রাস্টবোর্ড। দেবত্র ট্রাস্টবোর্ডের সভাপতি হিসেবে কোচবিহার জেলা শাসক এই রাস উৎসবের উদ্বোধন করেন।
রাজ আমলের এই ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব কোচবিহারের মহারাজাদের ধর্মনিরপেক্ষতার এক নিদর্শন। রাজ আমল থেকে এই রাস উৎসবের রাস চক্র তৈরি করে আসছেন এক মুসলিম পরিবার। বংশ পরম্পরায় আলতাফ মিয়ার পরিবার এই রাস উৎসবের রাসচক্র তৈরি করে। পূর্বে আলতাফ মিয়ার বাবা , ঠাকুরদারা এই রাস চক্র তৈরি করতেন। বর্তমানে আলতাফ মিয়া এই রাস চক্র তৈরি করে আসছেন। লক্ষ্মী পূজার পর থেকে নিরামিষ ভোজন করে তিনি এই রস চক্র তৈরির কাজ শুরু করেন।
আরও পড়ুন পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম ভুতুড়ে শহর কার্শিয়াং !
রাস পূর্ণিমার দিন তিনি মদনমোহন মন্দিরে এই রাস চক্র স্থাপন করেন। আর এই রাস চক্র ঘুরিয়ে শুরু হয় রাস উৎসব।গতকাল সন্ধ্যায় কোচবিহার বাসির মঙ্গল কামনায় পুজোয় বসেন কোচবিহারের জেলা শাসক পবন কাদিয়ান। পুজো সম্পন্ন করেন রাজপুরহিত হীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। রাত ৯ টা ১০ মিনিটে রাস চক্র ঘুরিয়ে রাস উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলাশাসক পবন কাদিয়ান।
এরপর সাধারণ ভক্তদের জন্য মন্দিরের গেট খুলে দেওয়া হয়। এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে কোচবিহার মদনমোহন মন্দির এর পাশে অবস্থিত রাসমেলা ময়দানে কোচবিহার পৌরসভার পক্ষ থেকে রাস মেলার আয়োজন করা হয়।আজ সন্ধ্যায় এই মেলার উদ্বোধন করা হবে। কুড়ি দিন যাবত চলবে এই মেলা। ইতিমধ্যেই রাস মেলা ময়দানে দূরদূরান্ত থেকে প্রসার নিয়ে এসেছে ব্যবসায়ীরা। সার্কাস, নাগরদোলা সহ এই মেলায় থাকছে নানান বিনোদনের ব্যবস্থা।