রামকৃষ্ণ সেতুর জেরে স্থবির আরামবাগ: অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘটে বিপাকে নিত্যযাত্রী

রামকৃষ্ণ সেতুর জেরে স্থবির আরামবাগ: অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘটে বিপাকে নিত্যযাত্রী

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



হুগলি – আগেই ঘোষণা হয়েছিল, পোস্টারও পড়েছিল—শেষ পর্যন্ত ১৫ অক্টোবর সকাল থেকেই আরামবাগ মহকুমায় বন্ধ হয়ে গেল সমস্ত রুটের বাস চলাচল। আরামবাগের সব ক’টি বাস অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, রামকৃষ্ণ সেতু দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চূড়ান্ত আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান লোকসান সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ায় ১৫ অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘটের পথে হাঁটলেন তাঁরা।

ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে সকাল থেকেই। আরামবাগ শহর ও আশপাশের প্রান্তে দেখা গিয়েছে যাত্রীদের লম্বা লাইন, কেউ ট্রেকার বা অটো ধরার চেষ্টায় ব্যস্ত, কেউ আবার অফিস বা স্কুলে যাওয়ার উপায় খুঁজে হিমশিম খাচ্ছেন। চালক ও মালিকরা জানাচ্ছেন, আগেই তাঁরা যাত্রীদের কাছে সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছিলেন, কিন্তু প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ না থাকায় বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত। প্রায় দু’মাস কেটে গেলেও রামকৃষ্ণ সেতুর মেরামতির কাজ শুরু হয়নি, ফলে যাত্রীবাহী বাস ও ভারী যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ।

বাস মালিকদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে তাঁদের ৪০ কিলোমিটার ঘুরপথে যেতে হচ্ছে, যার ফলে জ্বালানির খরচ ও সময়—দু’টোই বহুগুণ বেড়েছে। দূরপাল্লার বাসগুলিও একই সমস্যায় পড়েছে। ঘুরপথে চলাচলের কারণে নিত্যযাত্রীদেরও ভাড়ার খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থা নয়, গোটা শহরের ব্যবসাও পড়েছে ধাক্কায়। পণ্য পরিবহণে সমস্যা হওয়ায় বাজারে জিনিসপত্রের যোগান কমছে, ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা বলছেন—চলাচল বন্ধ মানেই ক্রেতার ভিড় কমে যাওয়া।

বর্তমানে আরামবাগ শহর ও মহকুমা জুড়ে কোথাও যাত্রীবাহী বাস চলছে না। বিভিন্ন রাস্তায় ও পেট্রোল পাম্পের ধারে সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। বাস মালিক সংগঠনের দাবি, রামকৃষ্ণ সেতুর হাইট বার খুলে দিলেই সব রুটের বাস চলাচল স্বাভাবিক করা যাবে। তাঁদের বক্তব্য, পিডব্লিউডি-র নির্দেশ অনুযায়ী ১০ টনের বেশি ভারী যান চলতে পারবে না—কিন্তু যাত্রীভর্তি বাসের ওজন ১০ টন অতিক্রম করে না। তাহলে কেন বাস চলাচল বন্ধ, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

এই অচলাবস্থা যত দিন চলবে, ততই সমস্যায় পড়বেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। বাস মালিকরা বলছেন, প্রশাসন যদি দ্রুত সমাধানের পথে না আসে, তাহলে এই ধর্মঘট আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top