রাশিয়ার ওপর আসছে আরও নিষেধাজ্ঞা। চলতি বছরের শেষ শীর্ষ সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনের জন্য আরও সহায়তা এবং রাশিয়ার ওপর আরও একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেইসঙ্গে গ্যাসের মূল্যও বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেন প্রতিরোধ চালিয়ে গেলেও সে দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে।
প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কির মতে, আপাতত যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই, বরং আগামী কয়েক মাসে পরিস্থিতির আরও অবনতির পূর্বাভাস দিয়েছেন তিনি। এমন প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনের সহায়তার ক্ষেত্রে কোনো কার্পণ্য করতে চাইছে না। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, ‘যতকাল প্রয়োজন তত দিন ধরে ইউক্রেনের জন্য রাজনৈতিক, আর্থিক, সামরিক ও মানবিক সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার অটুট রয়েছে।
ব্রাসেলস সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ইইউ এক হাজার ৮০০ কোটি ইউরো আর্থিক সাহায্য দেবে।’ রাশিয়ার ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে ব্রাসেলসে ইইউ রাষ্ট্রদূতরা নবম দফার নিষেধাজ্ঞাও প্রস্তুত করেছেন। এর আওতায় সম্ভবত আরও ২০০ রাজনৈতিক ব্যক্তিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। তা ছাড়া খনি ও জ্বালানি শিল্পসহ অন্যান্য কিছু ক্ষেত্রে ইইউ থেকে বিনিয়োগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে। আরও ব্যাংকের কার্যকলাপও খর্ব করার হচ্ছে। তবে, খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু ছাড় রাখা হচ্ছে। পোল্যান্ড ও লিথুয়েনিয়া সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এমন নরম মনোভাবের কারণে সারের ব্যবসার ক্ষেত্রে রুশ ব্যবসায়ীদের সুবিধা হবে।
ইইউর বর্তমান সভাপতি দেশ চেক প্রজাতন্ত্র জানিয়েছে, শুক্রবার লিখিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নবম দফার নিষেধাজ্ঞার তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বলেন, ‘এর মাধ্যমে রাশিয়ার অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা ধাক্কা খাবে। যুদ্ধ চালিয়ে যেতে রাশিয়ার আয় আরও সঙ্কুচিত করতে পেট্রোলিয়ামের পর এবার গ্যাসের মূল্যও বেঁধে দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেই লক্ষ্যে আগামী সোমবার সদস্য দেশগুলোর ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা সম্ভবত সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস এতকাল গ্যাসের বাজারে হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে এলেও শেষ পর্যন্ত আপত্তি তুলে নিয়েছেন।’
আরও পড়ুন – দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার মেলা
বছরের শেষ ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা রাশিয়ার যুদ্ধের কারণ জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও যুক্তরাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক ভর্তুকির কারণে ইউরোপের শিল্পবাণিজ্য জগতের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন। জার্মানির মতো দেশ বিচ্ছিন্নভাবে নিজস্ব শিল্পবাণিজ্য জগতের জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে। অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী দেশগুলি ইউরোপীয় স্তরে সমন্বয়ের মাধ্যমে এমন উদ্যোগের ডাক দিচ্ছে। আগামী বছর ইউরোপের আধুনিক প্রযুক্তি ক্ষেত্রকে আরও চাঙ্গা করতে ইইউ কমিশনকে নির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।