মালদা – মালদার হবিবপুরের শ্রীরামপুর অঞ্চলের বেহাল রাস্তাঘাটের চিত্র নতুন নয়। বর্ষা নামলেই কাদায় ডুবে যাওয়া, ভাঙা পথ পেরোনো আর নিত্যদিনের দুর্ভোগ যেন এখানকার মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কয়েকদিন আগে রানী সরেন নামের এক বৃদ্ধাকে খাটিয়ায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ছবি ভাইরাল হয়েছিল। এবার সেই বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর প্রশাসনিক ব্যর্থতার চরম সাক্ষী হয়ে রইল। পরিবারের অভিযোগ, যদি রাস্তা ভালো থাকত, হয়তো সময়মতো চিকিৎসা পেয়ে তিনি বেঁচে যেতে পারতেন।
এমন মৃত্যু কেবল এক পরিবারের শোক নয়, এটি গোটা সমাজব্যবস্থার প্রতি এক নির্মম প্রশ্ন। উন্নয়ন প্রকল্পের স্লোগান আমাদের কানে প্রতিধ্বনিত হলেও বাস্তবের চিত্র উল্টো। স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পরিকাঠামোর ঘাটতি মিলেমিশে আজও গ্রামীণ বাংলার অসংখ্য মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি বর্ষা এলেই আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
দুর্ভাগ্যজনক হল, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনার পরেও রাজনৈতিক দোষারোপের রাজনীতি চলছে সমানতালে। বিজেপি তৃণমূলকে দায়ী করছে, আর তৃণমূল প্রশ্ন তুলছে এলাকায় বিজেপির নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়ে। কিন্তু মানুষ কি শুধুই দায় চাপানোর জন্য? যাঁরা রাস্তা না থাকার কারণে খাটিয়ায় করে চিকিৎসা পেতে দৌড়ঝাঁপ করেন, তাঁদের কাছে রাজনৈতিক তরজা কোনও সমাধান নয়।
আজ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে এমন এলাকা চিহ্নিত করে অবিলম্বে রাস্তা মেরামতের ব্যবস্থা করা। স্বাস্থ্য পরিষেবা ও দ্রুত পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কারণ উন্নয়নের সবচেয়ে বড় পরিচয় আড়ম্বরপূর্ণ প্রকল্প নয়, বরং মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ। রানী সরেনের মৃত্যুর মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেই শপথ নেওয়ার সময় এখনই।
