রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সতর্কতা ছিল। তা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কেনা ও ডলার বাদ দিয়ে রুপি-রুবলে আর্থিক লেনদেনের নীতিতেই অনড় থাকছে ভারত। শুক্রবার রাজধানী দিল্লিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সারগেই লাভরভের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। এ বৈঠকের পরই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, ভারত ইতোমধ্যেই রাশিয়া থেকে সস্তায় অশোধিত তেল কিনতে শুরু করে দিয়েছে। যদি বাজারের থেকে কম দামে মেলে, তা হলে কেনা হবে না কেন?

 

সুত্র মারফত জানা যায়,  রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীও জানিয়েছেন, ডলার, ইউরোর মাধ্যমে বাণিজ্য এড়িয়ে রুপি ও রুবলের লেনদেনের মাধ্যমে আরও অনেক বেশি পরিমাণে তেল, সামরিক অস্ত্রশস্ত্র বা অন্য পণ্য কেনাবেচা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রুপি-রুবলের লেনদেন আরও জোরদার করতে হবে। শুক্রবার রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। ইউক্রেন পরিস্থিতি ও রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনার বিষয়ে লাভরভ মোদিকে জানিয়েছেন।

 

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়, মোদি দ্রুত হিংসা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ভারত যে কোনোভাবে শান্তি প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে তৈরি বলেও জানান মোদি। লাভরভ বলেন, ‘ভারত যদি সমস্যা মেটাতে কোনও ভূমিকা পালন করতে চায়, যদি সেটা আন্তর্জাতিক সমস্যা নিয়ে ভারতের যুক্তিসঙ্গত অবস্থানের সঙ্গে মেলে, তা হলে ভারত এ প্রক্রিয়ায় সাহায্য করতে পারে।’ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে এখন পর্যন্ত ভারতের কূটনৈতিক ভারসাম্যের নীতির প্রশংসা করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে জয়শঙ্কর লাভরভকে বলেন, ভারত জাতিসংঘের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন, ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে সম্মান জানিয়ে আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমেই যে কোনও বিবাদ মেটানোর পক্ষে।

আর ও পড়ুন   সল্টলেকের গেস্ট হাউসে নিয়ে এসে তরুণী ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

লাভরভের ভারত সফরের ঠিক আগেই যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনের প্রতিনিধিরা দিল্লিতে এসেছিলেন। রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা সত্বেও তা এড়িয়ে মস্কোর সঙ্গে ভারতের লেনদেন নিয়ে সতর্ক করেছিলেন তারা। উল্টো দিকে ভারতের যুক্তি ছিল, ইউরোপের অনেক দেশই তো রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস কিনছে। তা ছাড়া, রুপি ও রুবলের মাধ্যমে লেনদেন পুরনো ব্যবস্থা। তাকে নতুন করে মজবুত করা হচ্ছে। ভারত নিজের প্রয়োজনের ৮৬ শতাংশ তেল বিদেশ থেকে আমদানি করলেও রাশিয়া থেকে ১ থেকে ২ শতাংশ মতো তেল আমদানি করে।

 

রাশিয়া যুদ্ধের আগের দাম থেকে ব্যারেল প্রতি ৩৫ ডলার সস্তা দরে ভারতকে দেড় কোটি ব্যারেল তেল বেচতে রাজি হয়েছে। ভারতের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাশিয়ার থেকে ভারতে তিন-চার দিন জোগান দেওয়ার মতো তেল কেনা হয়েছে। সূত্রের খবর, ইন্ডিয়ান অয়েল ইতোমধ্যেই ৩০ লাখ ব্যারেল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম ২০ লাখ ব্যারেল এবং বেসরকারি সংস্থা সিএনই ১৮ লাখ ব্যারেল তেল কিনেছে। মে মাসে এই তেল সরবরাহ হবে।

 

সীতারামনের বক্তব্য, ‘আমি তো নিজের দেশের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেব। আমি নিজের জ্বালানির নিরাপত্তাই দেখব। যদি সস্তায় জ্বালানি মেলে, তা হলে কিনব না কেন?’ অন্য দেশের তুলনায় রাশিয়া থেকে ভারত তেল কম কিনলেও রাশিয়া থেকে ভারত সবচেয়ে বেশি যুদ্ধাস্ত্র কেনে। ফলে সেক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রুপি-রুবলের মাধ্যমে লেনদেন চালু করা জরুরি।

 

অতীতেও এ ব্যবস্থা চালু ছিল। নতুন করে এ ব্যবস্থা জোরদার করতে রাশিয়ার সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রতিনিধিরা ভারতে আসতে পারেন বলে ইঙ্গিত মিলছে। এ ব্যবস্থায় ভারতে অবস্থিত রাশিয়ার ব্যাংকের শাখায় আমদানিকারীরা পণ্যের দাম বাবদ টাকা জমা করবেন। ওই ব্যাংক রাশিয়ার রপ্তানিকারীকে রুবলে তা মিটিয়ে দেবে। যুদ্ধের সুযোগে এ দেশের রপ্তানিকারীরাও রাশিয়ায় রপ্তানি বাড়াতে চাইছেন। রুপি-রুবলের বিনিময় মূল্যের ওঠানামার ফলে লোকসান হলে তা কে, কীভাবে বহন করবে, তা নিয়ে দর কষাকষি চলছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত যা-ই কিনতে চাইবে, আমরা তা জোগান দেওয়ার পক্ষে।’

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top