রেশন তুলে নেবার অভিযোগে বৃদ্ধ মায়ের হাত ভেঙে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেন শিক্ষক ছেলে

রেশন তুলে নেবার অভিযোগে বৃদ্ধ মায়ের হাত ভেঙে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেন শিক্ষক ছেলে

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের খাদ্য সাথী প্রকল্পের ( সুন্দবনসংলগ্ন এলাকায় যা আইলার রিলিফের চাল নামে খ্যাত) চাল গম রেশন দোকানের থেকে তুলে নেবার অভিযোগে বৃদ্ধ মায়ের হাত ভেঙে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেন শিক্ষক ছেলে। ভিটে মাটি হারিয়ে খান দুয়েক হাসপাতাল ঘুরে ভাঙা হাতেই আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিলেন ৬৮ বছরের বৃদ্ধা মা তীর্থ বালা সিংহ ।

 

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার মিনাখাঁ থানার চৈতল গ্রাম পঞ্চায়েতের চৈতল গ্রামের ঘটনা। ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ তীর্থ বালা সিংহ জীবনের শেষ সম্বল জমিটুকু ছোটো ছেলে কে লিখে দেয় বসবাসের জন্য। ছোটো ছেলের কাছেই থাকেন মা তীর্থ বালা সিংহ। ছোটো ছেলেকে কেন জমি লিখে দিলেন মা সেই কারণে আগে থেকেই পেশায় শিক্ষক বড় ছেলে সুভাষ সিংহ শুরু করে অকথ্য অত্যাচার। বছর কয়েক আগে তীর্থ বালা দেবীর স্বামী মারা যান।

 

তার পর থেকে বড় ছেলে সুভাষ সিংহ মাকে অকথ্য গালিগালাজ করতে থাকে সঙ্গে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনও বাড়িয়ে দেয়। গত বৃহস্পতিবার তা চরমে ওঠে রেশনের চাল তুলে নেওয়া কে কেন্দ্র করে । রেশন দোকানের নির্দেশে পালা মত তীর্থ বালা দেবী খাদ্য সাথীর সাপ্তাহিক চাল গম সংগ্রহ করেন । পরের সপ্তাহে বড় ছেলে সুভাষ সিংহের রেশন নেবার কথা। কিন্তু তার রেশন বৃদ্ধ মা তুলে নেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে সুভাষ। পরিনতিতে মেরে মায়ের বাম হাত ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জ্যেষ্ঠ পুত্র শিক্ষক সুভাষ সিংহের বিরুদ্ধে।

 

অভিযোগকারিণী মা তীর্থ বালা সিংহের অভিযোগ তার জ্যেষ্ঠপুত্র নাম সুভাষ সিংহ, পেশায় স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সে জোরপূর্বক জমি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য নিয়মিত চাপ সৃষ্টি করে। তাতে মা রাজি না হওয়ায় প্রায়শই তার বড় ছেলে তাকে মারধর করতো। তার জন্য কোমরে ও ঘাড়ে চোট পেয়ে বেশ কিছু দিন কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সবশেষে গত বৃহস্পতিবার তার বড় ছেলে তাকে মারধর করে হাত ভেঙে দেয় এবং বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।

 

ঘটনায় আহত ৬৮ বছরের বৃদ্ধ মহিলা তীর্থবালা সিংহকে আত্মীয় পরিজনরা আহত অসহায় রাস্তা থেকে উদ্ধার করে এবং মিনাখা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে দিন পাঁচেক চিকিৎসা করার পর তীর্থ বালা দেবীর বোন অষ্টমী ভোজ মিনাখা গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে নিজের বাড়ীতে নিয়ে যায়। এখনো তীর্থ বালা দেবী তার বোনের বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছে। ইতিমধ্যে বড় ছেলের বিরুদ্ধে মিনাখা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তীর্থ বালা দেবী । অবশ্য ঘটনার এক সপ্তাহ কেটে গেলেও কোনরূপ সুরাহা মিলেনি বলে জানান ওই আক্রান্ত বৃদ্ধা ।

 

তার বড় ছেলের যেন কঠিন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় সেই দাবি জানিয়েছেন বৃদ্ধা মা । একবিংশ শতাব্দীতে এই ধরনের ঘটনা আরো একবার প্রমান করলো সামাজিক অবক্ষয় শুধু নয় পেশায় শিক্ষক হয়ে জমি লিখে না দেওয়াতে যদি ছেলের হাতে আক্রান্ত হন মা। তাহলে সেই শিক্ষক কি শিক্ষা দেবেন খুদে পড়ুয়াদের । যদিও কীর্তিমান শিক্ষক ছেলে সুভাষ সিংহ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি নন। এটা তাদের পারিবারিক বিষয়, গ্রামের কিছু লোকের উস্কানিতে তার মা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top