দিল্লী – জীবনের স্বপ্ন আর প্রতিশ্রুতির সঙ্গে দিল্লিতে পা রেখেছিল এক তরুণী—রোশ্মিতা হোজাই। অসমের ডিমা হাসাও জেলার একান্ত এক ঘর থেকে উঠে আসা এই মেয়ে সরকারি চাকরির স্বপ্নে এসেছিল দেশের রাজধানীতে। কিন্তু সেই স্বপ্ন গিয়েছিল ভেঙে চুরমার হয়ে। পাঁচদিনের নিখোঁজ পর্বের পর পাওয়া গেল তাঁর নিথর দেহ।
মাত্র ক’দিন আগেই পরীক্ষা দিয়ে দু’জন বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিল উত্তরাখণ্ডে। ক্যাম্পিং, পাহাড়, প্রকৃতি—সবকিছুই ছিল পরিকল্পনার অংশ। কিন্তু সেখানেই যেন প্রকৃতির সৌন্দর্য ঢাকা দিয়ে ফেলল এক অন্ধকার গল্প।
৬ জুনের সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন তিনি। বলা হয়, নদীর ধারে তাঁরা ছিলেন। এরপর কী ঘটে গেল, সেটিই এখন হাজার প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।
মঙ্গলবার SDRF-এর ডুবুরিরা উদ্ধার করলেন রোশ্মিতার দেহ।
সেই খবরে শুধু তাঁর পরিবার নয়, গোটা ডিমা হাসাও জেলার বুকেও নেমে এল ভারী শোকের ছায়া। ডিমা হাসাওয়ের সিইএম দেবোলাল গোরলোসা সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “এটি অকল্পনীয় ক্ষতি। রোশ্মিতা আমাদের সমাজের এক আশার প্রতীক ছিল।” একইসঙ্গে তিনি বিচার চেয়ে বলেন, “এই ভয়াবহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
আজকের দিনে যখন নারীশক্তির জয়গান করা হয়, তখন এমন একটি ঘটনা কেবল হৃদয় বিদারক নয়, সমাজের চেতনাকেও ধাক্কা দেয়।
প্রশ্ন একটাই—এই মৃত্যু কি নিছকই দুর্ঘটনা, নাকি এর গভীরে আছে আরও কিছু?
উত্তরাখণ্ড পুলিশ আপাতত আত্মহত্যার সম্ভাবনাও বিবেচনায় নিচ্ছে, তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
সত্যিই কি একজন তরুণী পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়, আর পাঁচদিন পরে ফিরে আসে শুধুই নিঃসাড় দেহ হয়ে?
রোশ্মিতার মৃত্যু আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এখনও মেয়েদের ‘নিরাপদ’ থাকার লড়াই শেষ হয়নি। এখনও কন্যাসন্তানকে নিয়ে কোনও পরিবার শহরের রাস্তায় নামলে দুশ্চিন্তা থামে না।
