লক্ষী পূজোর মেলায় জুয়ার আসরে ছুরিকাহত যুবক। লক্ষ্মী পূজার মেলায় ছুরিকাহত যুবক। গণপিটুনিতে গুরুতর আহত অভিযুক্ত। জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির সাকোঝোরা ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের ঠাকুর পাঠ এলাকার ঘটনা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ধূপগুড়িতে।
জানা যায়, ধূপগুড়ি ব্লকের গোসাইরহাটের ফণির মাঠে লক্ষি পূজার মেলা বসেছিলো সেই সাথে চলছিলো অর্কেস্ট্রা অনুষ্ঠান। আর সেই অনুষ্ঠানের আড়ালে চলছিল জুয়ার আসর। সেখানেই গন্ডগোলের সূত্রপাত বলে দাবি স্থানীয়দের। জুয়ায় হেরে গিয়ে ঝামেলার শুরু এমন টাই মনে করছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ গোপাল রায় নামে এক যুবক জয়ন্ত রায়ের বুকে ও পেটে ছুরি চালিয়ে দেয়। যার ফলে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে জয়ন্ত। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা গোপাল রায়কে ধরে গণপিটুনি দেয়।
অনুষ্ঠান চলার মাঠে প্রচুর পরিমাণে মানুষ ছিলেন স্বাভাবিকভাবেই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় বলে অভিযোগ।ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ধূপগুড়ি থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তড়িঘড়ি মেলা বন্ধ করে দেয়। এদিকে আহত গোপাল রায় ও জয়ন্ত রায়কে প্রথমে ধূপগুড়ি গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে রাতেই তাদেরকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এদিন সেই মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গিয়েছে যে গোটা মেলা প্রাঙ্গণ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মদের বোতল, অনুষ্ঠানের মঞ্চের পেছনে চারটি জুয়া খেলার বোর্ড বসানো হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরকালে এই ধরনের ঘটনায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা প্রশাসন। প্রশ্ন উঠছে কি করে প্রতিটি গ্রামে গঞ্জে অনুষ্ঠানের আড়ালে জুয়ার আসর বসছে। গ্রামে গ্রামে সিভিক ভলেন্টিয়ার, ভিলেজ পুলিশ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কি জানছে না? নাকি জেনেশুনে এসমস্ত জুয়ার বোর্ড বসার অনুমতি দিচ্ছে এই সমস্ত প্রশ্ন কিন্তু এখন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মধ্যে। তবে এদিনের ঘটনায় পরিষ্কার যে এখনো গ্রামেগঞ্জেসহ বিভিন্ন জায়গায় জুয়ার আসর বসছে রমরমিয়ে। একদিকে যেমন জুয়ার আসরে সর্বশ্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে বাড়ছে মদ্যপান ও অসামাজিক কাজকর্ম। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে মেলা কমিটির দাবি ঘটনাটি ঘটেছে মেলা চত্বর থেকে ২০০ মিটার দূরে।
আরও পড়ুন – দিলীপ বাবুর কাছে যেটি হাতি তৃণমূলের কাছে সেটি মশাঃ কুনাল
আহত জয়ন্ত রায়ের পরিবারে সদস্য উত্তম কুমার রায় জানান, গোপাল রায় নামে যুবক আমার ভাগনা জয়ন্ত রায়কে ছুরি মেরে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছে লক্ষ্মী পুজো মেলার অনুষ্ঠানের মাঝে। গুরুতর আহত অবস্থায় আমার ভাগনা হসপিটালে ভর্তি। এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই আইনের কাছ থেকে। ঘটনা প্রসঙ্গে ভাস্কর রায় মেলা কমিটির সদস্য বলেন, লক্ষী পূজা উপলক্ষে আমাদের মেলাকে কেন্দ্র করে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছিল। আর ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে তা হলো মেলা থেকে ২০০ মিটার দূরে। আমরা ছুরিকাহত এবং গণপিটুনিতে আহত দুই যুবকের পরিবারের পাশে আছি।
অভিযুক্ত গোপাল রায়ের বাবা জানান, আমি মেলায় দোকান করছিলাম কি কারনে আচমকা এইভাবে ঘটনা ঘটল কিছুই জানিনা। মেলার দু-একজন দৌড়ে এসে আমায় জানালো যে আমার ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ধুপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পড়ে জলপাইগুড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর বেশি কিছুই জানিনা আমি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ।