এই গ্রামে হয়না লক্ষ্মী পুজো, কারণ জানলে অবাক হবেন

এই গ্রামে হয়না লক্ষ্মী পুজো, কারণ জানলে অবাক হবেন

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram
লক্ষ্মী

এই গ্রামে হয়না লক্ষ্মী পুজো, কারণ জানলে অবাক হবেন । আজ লক্ষ্মীপুজো। কিন্তু বীরভূম জেলার এই গ্রামে কারও বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো হয় না। মূর্তিতে বা ঘটে কিছুতেই নয়। গ্রামটির নাম ঘোষ গ্রাম। বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানার এই গ্রামের নাম ঘোষ গ্রাম হলেও গোটা গ্রামে একজনও ঘোষ নেই। এই গ্রামেই রয়েছে কামদেব ব্রহ্মচারী প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্মীর দারুমূর্তি। তৈরি হয়েছে লক্ষ্মীর মন্দির। সেই মন্দিরেই আজ পুজো দেবে গোটা গ্রাম।

 

কয়েকশো বছর ধরেই এমনই ধারা চলে আসছে। শুধুমাত্র একটা আস্ত গ্রাম নয়, দুই সীমান্তবর্তী জেলার ৫১টি গ্রামের সর্বজনীন লক্ষ্মীপুজো হয় বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের ঘোষ গ্রামের লক্ষ্মী মন্দিরে। কারণ একটাই, এই গ্রাম পরিচিত মা লক্ষ্মীর গ্রাম হিসাবে।

 

গ্রামের বাসিন্দারা জানান, কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমার রাতে শঙ্খের আওয়াজও এখানে নেই। গৃহস্থ পরিবারও কেউ বাড়িতে লক্ষ্মীর ঝাঁপিও রাখে না। কারণ গ্রামের সবার বাড়িতেই লক্ষ্মীপুজো করাই নিষিদ্ধ। কারণ মা লক্ষ্মী এখানে সর্বজনীন। এখানে লক্ষ্মী মন্দিরে বারোমাস পূজিতা হন তিনি। রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্মী মন্দির এই ঘোষ গ্রামেই। যেখানে মা সর্বজনীন রূপে পূজিতা হন শত শত বছর ধরে, যা রাজ্যে অনন্য নজির।
বীরভূমের বর্ধিষ্ণু এই ঘোষ গ্রামের লক্ষ্মী মন্দির ঘিরে মিথের ছড়াছড়ি।

 

শোনা যায়,  প্রায় পাঁচশো বছর আগে একদিন এই গ্রামে এলেন পূর্ববঙ্গের এক পরিব্রাজক সন্ন্যাসী কামদেব ব্রহ্মচারী। এই গ্রামের একটি নিম গাছের তলায় আশ্রয় নিলেন তিনি। এই গাছতলাকে সাধনার স্থল হিসাবে চিহ্নিত করে থাকতে শুরু করেন। গোয়ালা জাতির বসবাস এই গ্রামে সব থেকে বেশি। এই গ্রামের বাসিন্দা দয়াল চন্দ্র ঘোষ ভাদ্র মাসে গ্রাম লাগোয়া কাঁদরের ধারে জমিতে চাষ করছিলেন। দয়াল ঘোষের ছোট ছেলে বাবাকে মাঠে খাবার দিতে আসে। সে দেখতে পায় কাঁদরের জলে একটি পদ্ম ফুল ভেসে যাচ্ছে। ফুল নেবার জন্য বাবার কাছে বায়না ধরে ছেলেটি। ছেলের আবদার মেনে দয়াল কাঁদরে নামে পদ্ম ফুল তুলতে। কিন্ত কাঁদরের বয়ে যাওয়া জলে পদ্ম ফোটে না।

 

আর ও পড়ুন    নেপালে ভয়াবহ বন্যায় মৃত ৪৩ জন, নিখোঁজ রয়েছেন ৩০ জন

 

তবুও ফুটন্ত অবস্থায় পদ্ম ফুল জলে দেখে তা নিতে গেলেও নাগাল পেলেন না দয়াল ঘোষ। ঐ রাতেই দয়াল ঘোষ মা লক্ষ্মীর স্বপ্নাদেশ পান ঐ কাঁদরে জলে নিরাকার রূপে দেবী অবস্থান করছেন। পরদিন কাঁদরের জলেই একটি নিম কাঠ ভাসতে দেখেন দয়াল। সেই কাঠ তুলে এনে দেবীর নির্দেশ মত গ্রামে নিম গাছ তলায় কামদেব ব্রহ্মচারীর কাছে নিয়ে যান। তিনিই ঐ নিম কাঠ থেকে লক্ষ্মী মূর্তি গড়ে তোলেন। দেবী মুর্তি প্রতিষ্ঠা হয় গ্রামেই।

 

‘‌ব্রহ্মচারীর আকর্ষণেই কান্দির মহারাজা লালাবাবু লক্ষ্মী দেবীর মন্দির নির্মাণ করেন। পশ্চিমবঙ্গে সেই অর্থে আর কোথাও এত প্রাচীন প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্মী মন্দির নেই।’‌ কথিত আছে, লক্ষ্মীর বসত ভূমি এই গ্রাম। তাই ঘোষ গ্রামে এক সময় ধান নয়, সরাসরি চাল ধরত। দীর্ঘদিন দেবীর হাতে তাই চালের শীষ শোভিত হত বলে দাবী গ্রামবাসীদের।

 

 

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top