লিপুলেখে রাস্তা তৈরি ভারত নেপাল সম্পর্কে মতানৈক্য শুরু হয়েছে। রাস্তা চওড়া করা নিয়ে ভারত ও নেপাল দুই দেশের মধ্যে ফের মতানৈক্য শুরু হয়েছে। ভারতের রাস্তা চওড়া করার সিদ্ধান্তে একেবারেই খুশি নয় নেপাল। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে চিনের উস্কানিতে দুই দেশের সম্পর্কে অল্প হলেও চিড় ধরেছে। আর তারই ফল লিপুলেখের রাস্তা চওড়া করা নিয়ে ভারত নেপাল মনমালিন্য।
নেপাল স্পষ্ট জানাচ্ছে তাদের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডে ভারত যেন কোনওরকম সমস্যার সৃষ্টি না করে। গত মাসে লিপুলেখ অঞ্চলে ভারত রাস্তা চওড়া করবে বলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তখন নেপালের জোট সরকার এ নিয়ে কোনও বিরুপ মন্তব্য করেনি, কিন্তু এবারের নেপাল কংগ্রেস যারা সে দেশের মূল ক্ষমতাসীন পার্টি তারা স্পষ্ট জানিয়েছে , ভারতের লিপুলেখে রাস্তা চওড়া করার সিদ্ধান্ত তারা মেনে নিচ্ছে না। সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার দাবিও জানিয়েছে তারা।
নেপাল কংগ্রেসের তরফে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, ‘নেপাল লিপুলেখ, কালাপানি, লিম্পিয়াধুরাকে নেপালের অংশ বলেই মানে। একমাত্র নেপালেরই অধিকার আছে এখানে কোনও কিছু করার। ভারতের কালাপানিতে ভারতের যে সব সৈন্যরা আছে তারা যেন দ্রুত ওখান থেকে ফিরে যান।
২০২০ সালের ৮ মে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং উত্তরাখন্ডের ধারচুলা থেকে চিন সীমান্তঘেঁষা লিপুলেখ পর্যন্ত ৮০ কিমি দীর্ঘ একটি রাস্তার উদ্বোধন করেন। এই রাস্তা চিনর সঙ্গে বাণিজ্যিক পথ হিসেবেও ব্যবহৃত হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। লিপুলেখ এমন একটি গিরিপথ, যেখানে উত্তরাখন্ড, তিব্বত ও নেপালের সীমান্ত এসে মিশেছে।
আর ও পড়ুন পারিবারিক জমি জায়গা নিয়ে সংঘর্ষ, যুবককে কুপিয়ে খুন
ভারতের দাবি, এই রাস্তাটি কৈলাস-মানসসরোবরের প্রাচিন তীর্থপথকেই অনুসরণ করেছে। নেপালের দাবি , লিপুলেখ তাদেরই ভূখণ্ড এবং রাস্তাটি কমপক্ষে ১৭ কিলোমিটার নেপালের ভূখণ্ড দিয়ে গেছে। সেখানে রাস্তা তৈরি করে ভারত ঠিক কাজ করেনি। এ নিয়ে নেপাল ভারতের হাইকমিশনকে তলব করেছিল এই বিষয়ে। নেপালের মতো ভারতের অতি বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। নেপাল ও ভারতের মধ্যকার সীমানা নির্ধারিত হয় ১৮১৬ সালের ৪ মার্চ। স্বাক্ষরিত হয়েছিল সুগাউলি চুক্তি।
সেই অনুসারে, নেপালের পশ্চিমে অবস্থিত মহাকালী নদীই হবে দুই দেশের মধ্যকার সীমানা। সহজ ব্যপার। কিন্তু সেটাই হয়ে যায় জটিল। তা তৈরি হয় মহাকালী নদীর উৎস নিয়ে। নেপালের দাবি, মহাকালী উৎপত্তি হয়েছে লিম্পিয়াধুরা থেকে যা নেপালের অংশ। ভারতের দাবি, এর উৎপত্তি হয়েছে লিপুলেখ থেকে যেখানে উত্তরাখণ্ড আছে। তবে বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট বলছেন, নেপালের মাথায় এসব ঢুকিয়েছে চিন। আর তাতেই ভারত নেপাল সম্পর্কে চিড় ধরেছে।