লোকালয়ে আসা অজগর সাপকে ধরে উত্যক্ত করার অভিযোগ, চাঞ্চল্য নাথুয়ায়। সদ্য ঘটে যাওয়া রাতের অন্ধকারে গয়েরকাটায় এক অজগর সাপকে গলায় পেঁচিয়ে উল্লাসের ঘটনায় রীতিমত প্রশ্নের মুখে পড়েছিলো বন দফতর। এবারে স্বয়ং বন দফতরের মতই উর্দি পরা এক যুবক নাথুয়া এলাকায় এক বাড়িতে ঢুকে পরা অজগর সাপের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সেই সাপকে উদ্ধার করে।
যেই বাড়ি থেকে সাপটি উদ্ধার করা হয় সেই বাড়ির মালিকের দাবি তারা বন দফতরের কর্মী ছিলেন। সেই সাপটিকে উদ্ধারের পর সেই সাপটিকে পুনরায় বস্তা থেকে বের করে বারংবার একটি লাঠির সাহায্যে লাল রঙের বস্তা নিয়ে অজগরটিকে ক্ষেপিয়ে ছবি ক্যামেরাবন্দি করা হয়। এমনকি সাপটিকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়ে যখন জঙ্গলে ছাড়া হয় সেসময়ও দেখা যায় সাপটিকে ছাড়ার পর লেজ ধরে টেনে বারবার উত্যক্ত করিয়ে বস্তার মধ্যে কামড় দেওয়ানো হচ্ছে। সেই ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই রীতিমত প্রশ্নের মুখে পড়েছে বন দফতরের ভূমিকা।
যদিও বন দফতরের দাবি সেই যুবক আদতেও বন দফতরের কোনো লোক নয়। তাহলে প্রশ্ন উঠছে বন দফতরের পোশাক পড়া এক ব্যাক্তি লোকালয়ে থেকে সাপ ধরে সেখানে নিজেকে বন দফতরের কর্মী বলে পরিচয় দিচ্ছে এবং আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন? সাপকে যেভাবে উতপ্ত করা হচ্ছে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে বন দফতরের ভূমিকা। তাহলে কি এই সমস্ত বিষয়গুলি নজরদারিতে নেই বন দফতরের? নাকি বন কর্মী বলেই লুকানোর চেষ্টা করছে বন কর্তারা? যেখানে এই অজগর সাপ সিডিউল ওয়ানের প্রাণী। সেই জায়গায় কি করে একটি অজগর সাপ কে নিয়ে এইভাবে উত্যক্ত করা চলল ?
আরও পড়ুন – পূজোর আগে হারানো সাবেকি মিষ্টির স্বাদ দিতে কলকাতায় মিষ্টি কার্নিভ্যাল
আইনের রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে সাধারন মানুষকে আইন কে মানবেন। মাঝে মধ্যেই খবরের শিরোনামে উঠে আসে সাপের বিষ পাচার, বন্য প্রাণী দেহাংশ পাচার। তাহলে তো যে কেউ এভাবে বন দফতরের পোশাক পড়ে পাচার করে দিতে পারে সাপের বিষ থেকে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ। পরবর্তীতে ধরা খেলে নিজেকে পরিবেশ প্রেমী ও সহ ঘোষিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী পরিচয় দিতে পারে। তবে বারবার বন্যপ্রাণী আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ডুয়ার্সে। তাহলে কি সচেতনতার অভাব, নাকি বন্যপ্রাণী আইন মানছে না সাধারণ মানুষ? নাকি নিষ্ক্রিয় বনদপ্তর এই প্রশ্ন কিন্তু এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ডুয়ার্স জুড়ে।
ঘটনা প্রসঙ্গে পরিবেশ প্রেমী সংস্থা ন্যাসের কর্মকর্তা নফসর আলী বলেন, যেভাবে বনদপ্তর এর পোশাক পরা এক কর্মী সাপকে বারবার উত্যক্ত করছেন এবং ব্যাগের মধ্যে কামড় দেয়ানো হচ্ছে, তাতে সাপের দাঁত ভেঙে যেতে পারে। সাপ তার শিকার করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। এই ভাবে বন্যপ্রাণী আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কখনই কাম্য নয়, এটা বেআইনি। জলপাইগুড়ি বন্যপ্রাণী বিভাগের আধিকারিক অংশু যাদব বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি, খোজ নিয়ে তারপরে প্রতিক্রিয়া দেব। তবে একটি ভিডিও আমি পেয়েছি বলে জানান তিনি।