পূর্ব বর্ধমান- শক্তিগড়ে ফের শুন্যে চলল গুলি! কয়লা কারবারি রাজু ঝা শুট আউটের হত্যার দুই বছরের মাথায় ,আবারও গুলির শব্দে কেঁপে উঠল এলাকা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই থমথমে এলাকা ,বুধবার সন্ধ্যায় শক্তিগড় থানার অন্তর্গত হীরাগাছিতে পুলিশের ধাওয়ার মুখে পড়লে একটি পিকআপ ভ্যানে করে পালানোর চেষ্টা করে কয়েকজন সন্দেহভাজন যুবক। অভিযোগ, পালানোর সময় তারা শূন্যে ২-৩ রাউন্ড গুলি ছোড়ে, যা এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়ায়। ঘটনার এলাকাবাসীরা ও পুলিশ ধাওয়া করে তাদের।
অভিযুক্তদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সন্দেহভাজনরা একটি চারচাকা গাড়িতে ছিল, যার নম্বর রাজস্থানের।এলাকাবাসীদের দাবি, বুধবার দুপুরে হীরাগাছি গ্রামের একটি ভাড়া বাড়িতে এসে ওঠে হিন্দিভাষী ৫-৬ জন যুবক। তাদের আচরণে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় স্থানীয়রা সন্ধ্যায় পুলিশে খবর দেন। একইসঙ্গে, যুবকদের পরিচয় জানার জন্য খোঁজখবর নিতেও শুরু করেন গ্রামবাসীরা তাদের কাছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে যুবকরা দ্রুত একটি পিকআপ ভ্যানে উঠে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু শক্তিগড়ের আমড়া এলাকার কাছে রেলগেট পড়ে থাকায় তারা আটকে যায়। ঠিক সেই সময় অপরপারে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ দেখে তারা গাড়ি ঘুরিয়ে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করে। এই সময়ই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাক্টরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাদের গাড়ির। ঘটনায় কার্তিক ক্ষেত্রপাল নামে এক ব্যক্তি আহত হন।স্থানীয়দের দাবি, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে যুবকরা গাড়ি থেকে ২-৩ রাউন্ড শূন্যে গুলি চালায়, এরপর দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা।
পুলিশও অভিযুক্তদের ধরতে তৎপর হয়ে যায় এবং গাড়ি নিয়ে তাদের ধাওয়া করে।হীরাগাছি গ্রামের বাসিন্দা বিনয় ভূষণ হালদারের ভাড়া বাড়িতে উঠেছিল ওই যুবকরা। তাদের আচরণ দেখে পাড়া-প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয় এবং তারা বাড়ির মালিককে বিষয়টি জানান। স্থানীয়দের আপত্তির পর বাড়ির মালিক যুবকদের ঘর খালি করার নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রামে থাকা ভিলেজ পুলিশ যুবকদের কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তারা গড়িমসি করতে থাকে। পরে সুযোগ বুঝে তারা গাড়িতে উঠে পালিয়ে যায়।
তবে তাদের এই আচরণ আরও সন্দেহজনক হয়ে ওঠে, ফলে পুলিশ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হীরাগাছি গ্রাম আতঙ্কে থমথমে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল, শক্তিগড়ের জাতীয় সড়কের ধারে একটি ল্যাংচার দোকানের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হন কয়লা কারবারি রাজু ঝা। সাদা রঙের ফরচুনা গাড়িতে থাকা রাজু ঝাকে লক্ষ্য করে একাধিক রাউন্ড গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের গুলির ঘটনা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করল। যদিও বুধবারের ঘটনায় রাজু ঝা হত্যার মতো পরিকল্পিত আক্রমণ ছিল না, তবুও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
রাজু ঝা হত্যার দুই বছর পর একই এলাকায় ফের গুলির ঘটনা নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। পুলিশের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, অভিযুক্তদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে ।
