শববাহী শকটে দুই সন্তানের দেহ

শববাহী শকটে দুই সন্তানের দেহ

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

কলকাতা – বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ এনআরএস হাসপাতালের মর্গের ভিতর থেকে কান্নার শব্দ বাইরে পর্যন্ত চলে আসছে। বাকি সবাই চুপ। মর্গের দরজার সামনে দাঁড়াল দু’টি শববাহী শকট। স্ট্রেচারে বের করা হল সাদা কাপড়ে মোড়া দু’টি দেহ। দেহ দু’টি ছোট। কাঁদতে কাঁদতে ছিটকে মর্গ থেকে বেরলেন এক মহিলা।তাঁর সন্তানরা আর ফিরবে না, এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না। আদরের দুই সন্তানকে ডেকেই চলেছেন। সাদা কাপড়ে মোড়া ছোট্ট দু’টি দেহ যদিও নিস্পন্দ।



বড়বাজারের চিৎপুর ক্রশিংয়ের একটি হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে মঙ্গলবার রাতে। তাতে অন্য অনেকের সঙ্গে প্রাণ গিয়েছে একই পরিবারের তিনজনের। সম্পর্কে তাঁরা ভাই-বোন ও দাদু। শিশুদের মা মধুমিতা মত্থু কৃষ্ণণ বরাত জোরে রক্ষা পেয়েছেন। তাঁর পুত্রের বয়স সাড়ে তিন বছর। কন্যা ১০ বছরের। আগুন কেড়ে নিয়েছে দু’জনকেই। তাদের সঙ্গে মৃত্যু হয়েছে মধুমিতাদেবীর বাবার। তাঁর বয়স ৬১ বছর। নাম এস মুত্থু কৃষ্ণণ। পরিবারটি তামিলনাড়ুতে থাকে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বৃদ্ধকে। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালেই ছিলেন মধুমিতার স্বামী টি প্রভু। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, দু’সন্তানকে দাদুর কাছে রেখে তাঁরা বাজার করতে গিয়েছিলেন। ফিরে জানতে পারেন, হোটেলের বন্ধ ঘরে প্রাণ গিয়েছে সন্তানদের ও শ্বশুরের। প্রথমে হাসপাতাল। তারপর লাশকাটা ঘর। বুধবার ময়নাতদন্ত শেষ হতে হতে বিকেল। দেহ রাতে পিস ওয়ার্ল্ডে থাকবে। বৃহস্পতিবার আকাশপথে যাবে তামিলনাড়ু, কৃষ্ণণদের বাড়ি। পিস ওয়ার্ল্ডে যেতে এনআরএস থেকে রওনা দিয়েছে শববাহী গাড়ি। কাচের বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছে শিশুদু’টির ফুলের মতো মুখ। সামনে পুলিসের গাড়িতে মধুমিতাদেবী। ফুঁপিয়ে কাঁদছেন। এ দৃশ্য কার্যত চোখে জল এনে দিয়েছে উপস্থিত সকলের। পুলিসকর্মীদের কঠিন চোখও ভিজে ভিজে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top