শাসকদলের দুই কাউন্সিলরের মধ্যে বচসার জেরে রনক্ষেত্র পানিহাটি। দলীয় কার্যালয়ের দখলদারি ঘিরে শাসকদলের দুই কাউন্সিলরের মধ্যে তীব্র বচসার জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল পানিহাটি পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের নাটাগড়ের মহেন্দ্রনগর এলাকা। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বপন কুন্ডু এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর টুলুরানী দাস ওই ওয়ার্ডের তৃনমূলের দলীয় কার্যালয়টি নিজেদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পুর-প্রতিনীধির মধ্যে রিতীমত বসচা,হাতাহাতি থেকে মারপিট বেধে যায়। একে অপরের দিকে তেড়ে যেতেও দেখা যায়।
এছাড়াও দুই কাউন্সিলরের অনুগামীরা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারপিটে জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এতটাই উতপ্ত হয়ে ওঠে যে ঘোলা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে লাঠি উচিয়ে উত্তেজিত তৃনমূল কর্মী-সমর্থকদের তাড়া করে। এরপরই উতপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পানিহাটি পুরসভার উপ-পুরপ্রধান সুভাষ চক্রবর্তী ওই দলীয় কার্যালয়টিতে তালা লাগিয়ে দেন। এপ্রসঙ্গে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃনমূল কাউন্সিলর টুলুরানী দাসের অভিযোগ,প্রত্যেকদিন সন্ধেবেলা কর্মীদের নিয়ে আমি এখানে বসে গল্পগুজব ও দলীয় আলাপ আলোচনা করি।
সোমবারও যথারীতি ওই সময় আমি দলীয় কর্মীদের নিয়ে কার্যলয়ে বসেছিলাম। হটাৎই ওয়ার্ড কাউন্সিলর স্বপন কন্ডুর নেতৃত্বে ১০০-১৫০ জন ছেলে এসে আমাদের ওপর আচমকা হামলা চালায়। স্বপন কন্ডুর সামনে ওনার দলবল আমাকে ও আমার দুই কর্মীকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করে। এমনকি স্বপন কন্ডু আমাকে উদ্দেশ্য করে বেশকিছু কটূক্তিও করে। তার আরও অভিযোগ,উনি ওয়ার্ডের মধ্যে সন্ত্রাসের সৃষ্টি করছেন,তোলাবাজী চালাচ্ছেন। কিন্তু এই ওয়ার্ডে ২৪ বছর আমি কাউন্সিলর থাকাকালীন এইধরনের পরিবেশ তৈরি হতে দিইনি।
উনি এবছরই এই ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তার পর থেকেই এলাকায় দখলদারির রাজনীতি চালাতে চাইছেন। টুলুরানী দেবীর বক্তব্যে,১৯৯৮ সাল থেকে আমি ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলাম। এবছর ২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আমি নির্বাচিত হই। দীর্ঘদিন ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর থাকাকালীন বহু বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে দলীয় কার্যালয়টি নিজের উদ্যোগে তৈরি করেছি। এই কার্যালয়টি দখল নিতে চাইছেন।
তাই আমাদের ওপর এই ধরনের আক্রমণ। যদিও তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃনমুল কাউন্সিলর স্বপন কুন্ডুর দাবি, আমি আমার দলীয় কার্যালয়ে এসেছিলাম। এটা যদি অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে অপরাধ। দলীয় কার্যালয় কারও ব্যাক্তিগত সম্পত্তি হতে পারে না। সেখানে সমস্ত কর্মীরাই আসতে পারেন। এতে অন্যায়ের কিছু নেই। তাই এদিন ওই দলীয় কার্যালয়ে আমি আসা মাত্রই ওরা আমাকে ঢুকতে বাধা দেয়। এমনকি ওই সময় আমার সঙ্গে থাকা দুই কর্মীকেও ওরা মারধোর করেছে।
একজনের জামা ছিঁড়ে দিয়েছে ও এক মহিলা কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। তার আরও দাবি, টুলুরানী দেবী এই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর। ওনি এখন ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তাই আমার বিরুদ্ধে উনি যদি কোন অভিযোগ আনেন,সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এদিকে দলীয় কার্যালয়ের দখলদারি নিয়ে শাসকদলের দুই কাউন্সিলরের মধ্যে বচসায় তৃণমূলের গোষ্টিদন্দ আবারও প্রকট হয়ে উঠল।