কাঠ মিস্ত্রীর ছেলে হয়েও শাস্ত্রীয় ধ্রুপদী নৃত্যে জাতীয় স্তরে দ্বিতীয় শিলিগুড়ির মিঠুন। শাস্ত্রীয় বা ধ্রুপদী নৃত্যে জাতীয় স্তরে রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করল শিলিগুড়ির ২০বছর বয়সী যুবক মিঠুন সরকার । দিল্লির ফরিদাবাদে অনিষ্ঠিত ম্যাজিক বুক অফ রেকর্ডের ন্যাশনাল ট্যালেন্ট চাম্পিয়ানশীপ ২০২১প্রতিযোগিতায় কর্নাটক ছাড়াও দেশের অন্যান্য রাজ্যকে পেছনে ফেলে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌছে গেলো মিঠুন।
বর্তমান যুগে কোনো শিক্ষাতেই যে ছেলে মেয়ের প্রভেদ নেই তা আরোও একবার প্রমাণ করে দিল শিলিগুড়ির মিঠুন। শাস্ত্রীয় বা ধ্রুপদী নৃত্য ছেলে মেয়ে উভকেই শিখতে দেখা যায়। তবে মেয়েরা এই নৃত্য করে যতটা প্রশংসা পায় ছেলেদেরকে ততটাই মানুষের তীর্যক উক্তি শুনতে হয়। মিঠুনও তার ব্যাতিক্রম নয়। তাকেও এই নৃত্য শেখার জন্য অনেকের অনেক কটুক্তি শুনতে হয়েছিল একটা সময়।
কিন্তু সেই সমস্ত কটুক্তিতেও থেমে থাকে নি সে। বরঞ্চ গুরু সঞ্চারী সরকারের পরামর্শে নিজেকে আরও বেশি করে অনুপ্রাণিত করে এগিয়ে গেছে মিঠুন। এরপর সে তার প্রদর্শনির মাধ্যমে রাজ্যে প্রথম হয়ে সমালোচকদের মোক্ষম জবাব দিয়েছে। মিঠুনের পিতা কাঠমিস্ত্রীর কাজ করেন, মা গৃহবধূ। এছাড়া পরিবারে রয়েছে এক দিদিও। আর পাঁচটা মায়ের মতো মিঠুনের মা সবিতা সরকারেরও ইচ্ছে ছিল মেয়ে গান গাইবে ও ছেলে তবলা বাজাবে।
আর ও পড়ুন কলকাতা পুরসভার মেয়র হলেন ফিরহাদ হাকিম
তবে তবলার পাশাপাশি ছেলেকে তিনি নাচের স্কুলেও ভর্তি করিয়ে দেয়। যেখানে ক্লাশিক্যাল বা শাস্ত্রীয় ধ্রুপদী ও কত্থক নৃত্য শেখানো হয়। ধীরে ধীরে মিঠুনের নাচের দিকেই ঝোঁক বাড়তে থাকে। ১২ বছর ধরে নাচ শিখে তার বিভিন্ন প্রদর্শনী করে আজ মিঠুনের ঝুলিতে প্রচুর পুরষ্কার। ঘরের শোকেসে সাজানো রয়েছে প্রচুর ট্রফি ও সার্টিফিকেট। তবে তার সবচেয়ে বড় পাওনা জাতীয় স্তরের দ্বিতীয় পুরষ্কার।
মিঠুন জানায়, গতবছর অন লাইনে ম্যাজিক বুক অফ রেকর্ডের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে রাজ্যে প্রথম হয়। এরপর চলতি মাসের ১৯ তারিখ দিল্লিতে ফাইনাল প্রতিযোগিতা হয়। সেখানে মোট ৩০ টি রাজ্যের ৩০ জন প্রতিযোগি অংশগ্রহণ করে। মিঠুনন দ্বিতীয় হয়। ট্রফি ছাড়াও, একটি সার্টিফিকেট গোল্ড মেডেল সহ ২ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয় তাকে। এত বড় মাপের প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় পুরষ্কার পেয়ে স্বভাবতই ভীষন খুশি মিঠুন ও তার পরিবার। আর তার এই প্রতিভায় রাজ্যের নামও উজ্জ্বল হয়েছে বলে প্রতিবেশিদের মত।