শিক্ষক শিক্ষিকা, অভিভাবকদের টাকায় তৈরি হলো স্মার্ট ক্লাসরুম। পড়ুয়াদের স্কুলে টানতে সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন স্কুলে তৈরি হচ্ছে স্মার্ট ক্লাস রুম। আর এবার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা এবং অভিভাবকরা নিজেদের গাঁটের টাকা খরচ করে খুদে পড়ুয়াদের জন্য তৈরি করলেন স্মার্ট ক্লাসরুম। ডোমজুড়ের দক্ষিন ঝাপরদহ মুসলিম পাড়া আপার প্রাইমারি স্কুলে এই ধরনের স্মার্ট ক্লাস রুম তৈরি করা হয়েছে। ক্লাসরুম তৈরি করতে গ্রামবাসীরা ও সাধ্যমত সাহায্য করেছেন। তবে শুধু স্মার্ট ক্লাসরুমই নয় পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে শিশুদের পাঠাগার, কম্পিউটার রুম, খেলার ঘরও। মোট সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এইসব তৈরি হয়েছে স্কুলে। শিক্ষক শিক্ষিকারা ১৫ দিনের করে বেতন এই উন্নয়নকল্পে দিয়েছেন।
স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরি হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে খুশির হাওয়া। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য এটা পড়ুয়াদের আরো বেশি স্কুল-মুখী করবে। খুশি পড়ুয়াদের অভিভাবকরাও। সোমবার স্মার্ট ক্লাসরুম, পাঠাগার, কম্পিউটার রুম, খেলা ঘরের উদ্বোধন হয়। বুধবার থেকে এখানে এই ব্যবস্থার মধ্যে পড়াশোনা চালু হবে। পর্ষদের বক্তব্য তারা এই ধরনের স্কুলকে জেলার অন্যতম মডেল স্কুল হিসাবে তুলে ধরবে এবং অন্যান্য জায়গাতেও এই ধরনের যাতে স্কুল হয় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেবে।
ডোমজুড় দক্ষিণ ঝাপরদহ মুসলিম পাড়া আপার প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা ছোট ছোট পড়ুয়াদের পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়ানোর জন্য দু বছর আগে স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরীর পরিকল্পনা করেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বন্দনা পোল্লে মন্ডল ও এই কর্মকাণ্ডের জন্য অন্যতম কারিগর সহ শিক্ষক সুব্রত ঘোষ বলেন আমরা বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই চিন্তা করেছিলাম ছেলেদের আরও উন্নত পরিকাঠামোর শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসার। আর সেটার রূপায়ণের ক্ষেত্রে আরো আমরা তৎপর হয় করোনা পরিস্থিতির পর। বর্তমানে ওই স্কুলে ২৩৮ জন ছাত্রছাত্রী এবং আট জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন।
স্কুলের উন্নয়নে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ১৫ দিনের মাইনে দান করেন। এলাকার সাধারণ মানুষও নিজেদের সাধ্যমত টাকা দিয়েছেন এই কাজে। শিক্ষকদের দেওয়া টাকা এবং এলাকাবাসীর দেওয়া টাকা মিলিয়ে মোট সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে এই স্মার্ট ক্লাসরুম সহ এই কর্মযজ্ঞ তৈরিতে। স্মার্ট ক্লাসরুম ছাড়াও তৈরি করা হয়েছে শিশুদের পাঠাগার, কম্পিউটার রুম, খেলার ঘর। স্মার্ট ক্লাসরুমের দেওয়ালে আঁকা হয়েছে নানা ধরনের পশুপাখি ও জীবজন্তুর ছবি।
এছাড়াও বর্ণ চেনানোর জন্য ও ধারাপাত পড়ানোর জন্য ইংরেজি শব্দ, নামতা লেখা হয়েছে দেওয়ালে। এছাড়া মানুষের শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ চেনাতে সেগুলোর নাম ও ছবি আঁকা হয়েছে। ক্লাসে প্রজেক্টরের মাধ্যমে ছবি এবং শব্দের সাহায্যে শক্ত জিনিসগুলোকে অতি সহজভাবে বাচ্চাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে জানান শিক্ষক শিক্ষিকারা। এতে পড়ুয়ারা খুব দ্রুত পড়াশোনা সহজে বুঝতে পারছে। স্কুলের প্রতি তাদের টান তৈরি হবে। ফলে স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও বাড়বে বলে মনে করছেন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা।