শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র পারিষদদের দপ্তর বন্টন নব মেয়র গৌতম দেবের। বিল্ডিং, পূর্ত দপ্তর,অর্থ, পরিকল্পনা ও রূপায়ণ সহ একাধিক দপ্তর থাকছে মেয়রের নিজ হাতেই।মুখ্যমন্ত্রী উন্নত শিলিগুড়ি গড়ার স্বপ্ন পূরণে লক্ষ্যে বদ্ধপরিকর তৃনমূল প্রশাসনিক বোর্ড। মেয়র গৌতম দেবের ডেপুটি হিদেবে রঞ্জন সরকারে ওপর ভরসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার পুরনিগমের সভাকক্ষে বেলা ২টো নাগাদ শপথ গ্রহণ করেন বোর্ডের ১০জন মেয়র পারিষদ।
শপথ গ্রহনের পরই মেয়র পারিষদদের মাঝে দপ্তর বন্টন করা হয়। দপ্তর সংখ্যা ও কাজের ভিত্তিতে দায়িত্ব বাড়ছে ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকারের। তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ইউপিই, বস্তি উন্নয়ন, ট্র্যাফিক, ন্যাশনাল আর্বান লাইভলিহুড মিশন, কর্মসংস্থান। প্রশাসনিক বোর্ডের সাত মাসের সময়কালে এই দপ্তরগুলির দায়িত্ব সামলে নিজ ছাপ রেখেছেন তিনি। তাই এবারের পুরনিগমের ওই দপ্তরগুলির ভার ন্যস্ত করা হয়েছে তার ওপর। গুরুত্ব বাড়চ্ছে তিন বারের জয়ী কাউন্সিলর দুলাল দত্ত এবং মানিক দের।
৩৮নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দুললা দত্তকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যদিও বিভাগীয় মেয়র কাউন্সিলরেরা সবটা বুঝে তারপরই ভাবনা চিন্তা সামনে রাখতে চাইছেন। সম্ভবত দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর ও প্রশাসন সামলানো দুলাল দত্তের অভিজ্ঞতার বিষয়টিকে মাথায় রেখেই পানিয় জল ও স্বাস্থ্যের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি দপ্তর দেওয়া হয়েছে তাকে। শহরের বাম আমলের অব্যবস্থার জেরে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে ফলে কাজটা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে বলেই মনে করছেন দুললা বাবু।
এদিকে পুরোনো কাউন্সিলর মানিক দে-কে আবর্জনা,স্বচ্ছতা মিশন (এসডব্লিউএম), পুরনিগম যানবাহন এবং বায়ো মাইনিং একটি নতুন দপ্তর সংযোজন করে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এদিকে পুর আইননানুগ বিষয়গুলির ক্ষেত্রেও বেশ কড়াকড়ির নজর থাকবে বোর্ডের সেমত আইন এর একটি পৃথক দপ্তর করে পূর্বের মেয়র পারিষদের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বর্তমান তৃনমূল কাউন্সিলর কমল অগ্রাওয়ালকে দেওয়া হয়েছে। তারসঙ্গেই বিদ্যুৎ ও আইটি সেলের মোট তিন বিভাগীয় দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাকে। পুর দপ্তরের কর মূল্যায়ন মোক্ষম ভূমিকা রয়েছে।
মেয়র গৌতম দেব এদিন প্রথমেই জানিয়ে দেন যে যেই পদ বা বিভাগের দায়িত্বে থাকুক না কেন তৃণমূলের ৩৭জন কাউন্সিলর নিয়ে শহরের উন্নয়নে একটি টিম হিসেবে কাজ করবে পুরনিগম। সে ক্ষেত্রে তিনি বলেন তিনটে বিরোধী দল যারা রয়েছেন তাদের যোগ্য মর্যাদা ও পরিসর দেওয়া হবে। মেয়র নিজ হাতে রেখেছেন বিল্ডিং, অর্থ, পূর্ত দপ্তর, প্রশাসন পরিচালনা, পরিকল্পনা ও রূপায়নের মোট পাঁচটি দপ্তর। চেয়ারম্যান প্রত্যূল চক্রবর্তী বলেন যারা বিরোধী রয়েছে শহর গড়ার ক্ষেত্রে তাদের সাহায্য চাই।
করের ওপর নির্ভর পুর নিগমের আয়ের উৎস। সেখানে সম্পত্তি কর,কর মূল্যায়ন ও শহরের বাজার সমেত তিনটি বিভাগের দায়িত্বে থাকছেন রাম ভজন মাহাতো। এদিকে প্রথমবারের নতুন কাউন্সিলরদের হাতে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। সেক্ষেত্রে ৪৬নাম্বার ওয়ার্ডের প্রথম বারের কাউন্সিলর দিলীপ বর্মনকে ট্রেড লাইসেন্সের ভার দেওয়া হয়েছে। একাধিক দপ্তর ভেঙে নতুন বিভাগ হিসেবে সংযোজিত করা হয়েছে। বৃক্ষরোপণ ও সৌন্দর্যায়ন, ট্র্যাফিক, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধীকরণ, বায়ো মাইনিং, আইন, আইটি সেল মোট পাচঁটি পৃথক বিভাগ গড়ে চলতি বোর্ড সম্পূর্ণ নতুনরূপে সংযোজিত করেছে।
আর ও পড়ুন নবদম্পতিকে কর্মসংস্থানের দিশা দেখাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন
এরমধ্যে শিলিগুড়ি শহরের যানজট একটি ভয়ঙ্কর জলন্ত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে শহরের যানজট সমস্যা সমাধানে দ্রুত প্রশাসনকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই কাজের দায়িত্ব নিজ হাতে রেখেছেন ডেপুটি রঞ্জন সরকার। তিনি বলেন এটা চ্যালেঞ্জিং কাজ। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে দ্রুত আলোচনায় বসবো। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের তরফে। শহরের নতুন করে দখলদারি করা চলবে না। বিকল্প রাস্তা করতে হবে। ৮ই মার্চ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি নিশ্চিতভাবে কোন গাইডলাইন দেবেন।
সেমত এগোবো। কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি ট্রাফিক সাজিয়ে তোলা হবে। তিনি বলেন মানুষের প্রত্যাশা অনেক। মুখ্যমন্ত্রী যে স্বপ্ন কলকাতার পর শিলিগুড়ি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে সে লক্ষ্য পূরণই আমাদের কাজ। এছাড়াও স্বয়ং সিদ্ধা ব্র্যান্ডিং গড়ার পাশাপাশি পুরনিগমের জল উৎপাদনের মডেল ও প্যাকেজিং চিন্তা ভাবনা রয়েছে। এতে প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। এদিকে নতুন অন্যদিকে নারী ও শিশু কল্যাণ বিভাগ সহ মিড মিল এবং জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধীকরণের দায়িত্বে রয়েছেন পুরোনো কাউন্সিলর শ্রাবণী দত্ত। শিক্ষা এবং সংস্কৃতি একমাত্র সংখ্যালঘু কাউন্সিলর শোভা সুব্বাকে অর্পণ করা হয়েছে।