শিলিগুড়িতে আবর্জনা নিষ্কাশনে আধুনিক হাইড্রোলিক হপার টিপার গাড়ি নামালো পুরনিগম। বর্জ্য শূন্য শিলিগুড়ি গড়ার লক্ষ্যেই আবর্জনা নিষ্কাশনে ৫ কোটি টাকার আধুনিক হাইড্রোলিক হপার টিপার গাড়ি নামালো পুরনিগম। বর্জ্য শুন্য শহর গড়ার লক্ষ্যে নাগরিকদের দরজায় আবর্জনা অপসারনের ক্ষেত্রে সচেতনতার আবেদন নিয়ে পৌঁছবে এবারে মেয়র ও মেয়র পারিষদেরা।
দিনভর যেকোনো সময় যত্রতত্র আবর্জনা প্রবণতায় চিরতরে বদল আনতে কাউমস শুক্রবার শহরের আবর্জনা নিষ্কাশনের জন্য ৬০ টি হুপার ট্রিপার গাড়ির আনুষ্ঠানিক ভাবে শিলিগুড়ি পুরনিগম থেকে মেয়র শুভসূচনা করেন। রাজ্যের সরকার বর্জ্য মুক্ত বাংলা তৈরীর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছে। সেমতো বর্জ্য শূন্য, জিরো গারবেজ শিলিগুড়ি গড়তে বিন্দু মাত্র সময় বিলম্ব না করে টার্গেট বেঁধেই এগোচ্ছে পুরবোর্ড। পুর নির্বাচনের পূর্বেই বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বর্জ্য নিষ্কাশনের বিরাট প্ৰকল্প পরিকল্পনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
আর বছর না ঘুরতেই নতুন পুর বোর্ডের সে পরিকল্পনা বড় অংশে রূপায়ান করেছে। শিলিগুড়ি ৪৭টি ওয়ার্ডে আধুনিক আবর্জনা নিষ্কাশনের গাড়ি, নির্মল সাথী ও নির্মল বন্ধু নিয়োগের মাধ্যমে উৎসমূলেই বর্জ্য পৃথকিকরনে সুপরিকল্পিতভাবে রুপায়নের কাজ চলছে। শিলিগুড়ির ২৮একর জমির ওপর পুরনিগমের ডাম্পিং গ্রাউন্ড বাম আমলে যা কার্যত ভাগাড়ে পরিণত হয়, দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে ওঠে এলাকাবাসীর মাত্র কয়েক মাসের দায়িত্বে এসেই তার হাল ফিরিয়ে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বর্জ্য পুনঃনবিকরণ মেগা প্রকল্প চালু করেছে তৃনমূল পুরবোর্ড।
আর এরপর সুডার গাইড লাইন মেনে ১২৪ জন নির্মল সাথী নিয়োগ করা হয়েছে ইতিমধ্যেই
যারা বাড়ি বাড়ি থেকে জৈব ও অজৈব বজ্র পৃথকীকরণ করে সংগ্রহ করে তা এই আধুনিক হাইড্রোলিক আবর্জনা নিষ্কাশনের গাড়িতে অপসারন করা হবে। এই গাড়ির মাধ্যমে বাঁশি বাজিয়ে নয়, এবারে পরিবেশ সচেতনতার বার্তার অডিও ক্লিপের মধ্য দিয়ে নাগরিকদের আবর্জনা নিষ্কাশনের সময়ে সজাগ করা হবে।
এদিকে শিলিগুড়ি শহরে নিত্যদিন শহর থেকে প্রায় ৩০০-৩৫০ মেট্রিক টন আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়।
যার মধ্যে ২০০ মেট্রিক টনই জৈব বর্জ্য। এই আধুনিক ৬০টি গাড়ি কাজের গতি আরও ত্বরান্বিত করতে চলেছে। পাশাপাশি পূর্বের ৩৫টি এ ধরণের গাড়ি রয়েছে। মেয়র গৌতম দেব বলেন সব মিলিয়ে ১০০টির বেশি গাড়ি রাস্তায় নামছে। বর্জ্য শূন্য শহর গড়ার টার্গেট নিয়ে আমারা এগোচ্ছি। ৪০টা গাড়ি ইতিমধ্যেই এসেছে ২০টা আর ছয়- সাত দিনের মধ্যে চলে আসবে। এই ৬০টি গাড়ি বাবদ ৫ কোটি ৯ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে।
তিনি বলেন পুরনিগমের প্রশাসক বোর্ডে থাকার সময়কাল থেকে পরিকল্পনা নিয়ে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের এই কাজটি করছি। শুধুমাত্র বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বজ্র নিষ্কাশন ও পুনর্নবীকরণের আধুনিক পরিকাঠামো পরিকল্পনা রূপায়ণ করলেই হবে না সচেতন হতে হবে নাগরিকদের। কারণ বর্তমানে শহর জুড়ে দিনভর গৃহস্থ্যের বর্জ্য যত্রতত্র অপসারনের প্রবণতা রয়ে গিয়েছে। মেয়র জানান নাগরিকদের মধ্যে ব্যাপক হারে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।
আরও পড়ুন – কেশপুরে গোষ্ঠী কোন্দল, পরিস্থিতি সামলাতে ময়দানে মানস ভুঁইয়া
বর্জ্য শূন্য শহরের বিষয়টি নিয়ে মানুষের দরজায় পৌঁছতে হবে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আবর্জনা নিষ্কাশনের নিয়মাবলী নিয়ে নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এলাকাভিত্তিক মেয়র নিজে এবং মেয়র পারিষদ ও কাউন্সিলররা রাস্তায় নামবে। মেয়র জানান কোভিড সচেতনতা থেকে প্লাস্টিক ব্যবহার বর্জন, নদী দূষন রোধ, আবর্জনা নিষ্কাশন নিয়ে মানুষকে বোঝানো হবে। ইতিমধ্যেই মানুষের কাছে যাওয়ার প্রস্তাব রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের কাছে পাঠিয়েছেন তিনি। রাজ্যের তরফে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই কর্মসূচির অনুমোদন মিলেছে।