শিলিগুড়িতে ৫১১কোটির মেগা জলপ্রকল্পে সবুজ সংকেত রাজ্যের। দীর্ঘ বাম জামানা ধরে শহরের পানীয় জল সংকটের সমাধানে উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার মাসিক বোর্ড সভা থেকেই ৩৪মাসের কম সময়তে বিকল্প জল প্রকল্প চালুর আশ্বাস পুরবোর্ডের। শহরের নাগরিকদের পানীয় জল পৌঁছে দিতে ১৩৫ এমএলডি বিকল্প জল প্রকল্প তৈরী হতে চলেছে।
পানীয় জল কষ্ট নিরসনের পাশাপাশি শহরের মাথার উপর আকাশ ঢাকা তারজালি সরিয়ে কলকাতা ধাঁচে শিলিগুড়িতে সু পরিকল্পিত ভূগর্ভস্থ কেবলিংয়ের পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়নের কথা ঘোষনা করেন মেয়র গৌতম দেব। এদিন বোর্ড সভার আগেই টক টু মেয়র অনুষ্ঠানে পুজোর আগে শহরের গুচ্ছের রাস্তা ঘাট সারাইয়ের কথা জানান মেয়ে গৌতম দেব। বোর্ড বৈঠকেও বর্ষায় শহরের ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা গুলির পুজোর আগেই ১০কোটি টাকা খরচের সারাইয়ে কাজের কথা জানান মেয়র গৌতম দেব। এদিন শিলিগুড়ি পুরনিগমের বোর্ড বৈঠকের শুরুতেই বিরোধী আসনে থাকা কার্যত শূন্য বাম তিন কাউন্সিলরেরা কাজের ক্ষেত্রে বৈষম্যের প্রসঙ্গ তুলে সভাকক্ষে বিতর্ক তৈরীর চেষ্টা করেন।
যা মেয়র কাজের খতিয়ান তুলে ধরে সে দাবি ন্যাস্যাৎ করে দেন। তিনি জানান জরুরী ভিত্তিতে ওয়ার্ড ধরে ধরে কাজ করা হচ্ছে। সমস্ত ওয়ার্ডে কাজের পিপিপি প্রজেক্ট তুলে ধরা হবে। তিনি বামেদের বেআইনি নিয়োগের প্রসঙ্গে ফের একবার উত্থাপিত করে বলেন ৩৫৪ জন অনৈতিকভাবে নিযুক্ত কর্মীদের বেতন বাবদ বাড়তি চাপ পুরনিগমের আর্থিক কোষাগারের উপর পড়ছে। কারন রাজ্যের সরকারকে অন্তরালে রেখে অনৈতিক নিয়োগ হওয়ায় তাদের বেতন রাজ্যের তরফে আসে না ফলত পুরনিগমের নিজস্ব খাতে থেকে প্রতিমাসে বেতন দিতে হচ্ছে। তবে একাধিক ওয়ার্ডে নিকাশি, রাস্তা উন্নয়নের কাজ চলছে। পালস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাব তৈরী হচ্ছে। অন্যদিকে দীর্ঘ দিনের পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে রাজ্যের তরফে মেগা জল প্রকল্পে সবুজ সংকেত মিলেছে বলেই ইঙ্গিত বাহি বক্তব্যে পেশ করেন মেয়র।
জানা গিয়েছে এই প্রকল্পের ফলে বর্তমানে উৎপাদিত ৫২ এমএলডির জলের ব্যবধান গিয়েপৌঁছবে ১৩৫ এমএলডিতে। শিলিগুড়ি ফুলবাড়ি জল প্রকল্পের বিকল্প ৫১১কোটির মেগা জল প্রকল্প হতে চলেছে। গাজোলডোবার তিস্তা থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল এনে ১৩৫এমএলডি পানীয় জল উৎপাদিত হবে। মেয়র গৌতম দেব অবশ্য বলেন এখন পানীয় জল নিয়ে কিছু বলছি না তবে শিলিগুড়ির মানুষের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী সহৃদয় দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখছেন। শিলিগুড়ির মানুষ যাতে জলকষ্ট থেকে মুক্তি পায়, সেজন্য ইউডিএমএ একটা সদার্থক ভূমিকা গ্রহণ করছে। পুরনিগমের জলের বিভাগীয় মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত বলেন দীর্ঘ বছরের এই সমস্যার ৩৪মাসের আগেই সমাধান হবে।
মেগা জল প্রকল্প চালু হয়ে যাবে। অন্যদিকে কলকাতার কেবল ও টেলিফোনে কোম্পানির তারের কুন্ডলি পাকিয়ে রয়েছে শহরের বিভিন্ন জায়গায়। যাতে রাস্তায় তার ছিড়ে পড়ছে প্রায়শই।যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই কেবল কোম্পানির সঙ্গে এক দফায় আলোচনা হয়েছে। কলকাতার ধাঁচে শিলিগুড়ি শহর জুড়ে মাটির নিচে দিয়ে বৈদ্যুতিক সংযোগ সহ যাবতীয় কেবলিং ভূগর্ভস্থ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মেয়র বলেন বিশেষজ্ঞ এজেন্সির সঙ্গে কথা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তারা কাজটি করবেন। প্রথম পর্যায়ে ব্যস্ততম মার্কেট ও বাণিজ্যিক এলাকাগুলিতে কাজ শুরু করা হবে। ধাপে ধাপে পুরো শহরে এই কাজ করা হবে।
আরও পড়ুন – সমগ্র দেশের পাশাপাশি আমাদের রাজ্যে ও বাড়ছে হ্যাকার দের দৌরাত্ম
পুজোর পরেই শিলিগুড়ি শহরে প্রথম পর্যায়ের ভূর্গভস্থ বৈদ্যুতিক সংযোগের কাজ শুরু হয়ে যাবে বলেই জানা গিয়েছে। অন্যদিকে মহানগরীর মডেলে শিলিগুড়ি মেট্র শহরকে কেন্দ্র করে চক্র পথ, চক্র রেলের ভাবনা চিন্তা নিয়ে এগোচ্ছে পুরোনিগম। মেয়র জানান শিলিগুড়ি শহরে একটি চক্র পথ তৈরীর ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। শহরে নির্দিষ্ট অংশ দিয়ে রিং বা সার্কুলার রোড হলে প্রচুর সুবিধে হবে। সার্কুলার রোড তৈরী হলেই আগামীতে শহরের উপর দিয়ে চক্র রেল চালানো সম্ভব হবে।