শীতের প্রথম হাওয়া: উত্তরে বৃষ্টির ইঙ্গিত, দক্ষিণে মেঘলা আকাশে মৃদু শীতের ছোঁয়া

শীতের প্রথম হাওয়া: উত্তরে বৃষ্টির ইঙ্গিত, দক্ষিণে মেঘলা আকাশে মৃদু শীতের ছোঁয়া

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



রাজ্য – শীতের প্রথম ঠান্ডা হাওয়ার ছোঁয়ায় আজ শনিবার (৮ নভেম্বর, ২০২৫) বাংলার আকাশে নেমেছে হালকা ধূসরতা। ভাগ্যক্রমে বড় কোনো দুর্যোগের আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি)। সর্বশেষ বুলেটিনে আইএমডি জানিয়েছে, উত্তর বাংলার কিছু এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, তবে দক্ষিণ বাংলায় মেঘলা আকাশের মধ্যেও বৃষ্টিপাত সীমিত থাকবে। বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ ও উত্তর-পশ্চিম দিকের ঠান্ডা বাতাসের মিশ্রণই এই মৌসুমি পরিবর্তনের কারণ। গত সপ্তাহের ভারী বৃষ্টির পর এই আবহাওয়া একটুখানি স্বস্তি এনেছে, তবে সকাল-বিকেলের সময় কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে আইএমডি।

উত্তর বাংলার অনিশ্চিত আবহাওয়া
দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, এবং বর্ধমানের উত্তরাংশে আজ সকাল থেকে মেঘ বাড়বে, বিকেল-সন্ধ্যায় বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হতে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬–২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৮–২০ ডিগ্রি। বায়ুর গতি ঘণ্টায় ১০–১৫ কিমি, বৃষ্টির সময় ২৫ কিমি পর্যন্ত বাড়তে পারে। পাহাড়ি এলাকায় সামান্য ভূমিধসের সম্ভাবনাও রয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পং অঞ্চলে ঘন কুয়াশা যাত্রীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

গত সপ্তাহের সাইক্লোন ‘মন্থা’র প্রভাব এখনও উত্তরাঞ্চলে রয়ে গেছে। টিস্টা, তর্শা, রাইডাক ও জলধাকা নদীর জলস্তর স্থিতিশীল থাকলেও কৃষকদের সতর্ক থাকতে হবে, কারণ জলাবদ্ধতা চা বাগান ও ধানক্ষেতের ক্ষতি করতে পারে। কলকাতার রিজিওনাল মেট্রোলজিক্যাল সেন্টারের মতে, পশ্চিমবায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টি আগামী দু’দিন অব্যাহত থাকতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, “এবার শীত একটু আগে এসেছে, কিন্তু বৃষ্টি কমলেই ভালো লাগবে।”

দক্ষিণ বাংলায় মেঘলা আকাশ, রোদের আভাস
দক্ষিণ বঙ্গের আকাশ তুলনামূলকভাবে পরিষ্কার থাকবে, তবে মেঘের উপস্থিতি এড়ানো যাবে না। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও বীরভূমে আংশিক মেঘলা আকাশের সঙ্গে কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৯–৩১ ডিগ্রি, সর্বনিম্ন ২০–২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কলকাতায় সকালে কুয়াশা থাকতে পারে, তবে দুপুরে রোদ উঠবে এবং বিকেলে ফের মেঘ জমতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮–১২ কিমি গতিতে হাওয়া বইবে, যা কৃষির জন্য সহায়ক।

আইএমডির সাত দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম, তবে উত্তরাঞ্চলের প্রভাবে কলকাতায় সামান্য (১–২ মিমি) বৃষ্টি হতে পারে। বাতাসে আর্দ্রতা থাকবে ৭০–৮০ শতাংশের মধ্যে, যা অ্যাস্থমা রোগীদের জন্য সমস্যাজনক হতে পারে। সকালবেলার ট্রাফিকে কুয়াশার কারণে গতি কম থাকতে পারে।

কৃষক ও যাত্রীদের জন্য পরামর্শ
কৃষকদের জন্য এটি মোটামুটি অনুকূল সময়। শুষ্ক আবহাওয়া সেচের চাপ কমাবে, তবে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার মতো শুষ্ক জেলায় ধুলোবালির সমস্যা দেখা দিতে পারে। উত্তরে যারা পাহাড়ি রাস্তায় যাত্রা করবেন, তাঁদের ছাতা ও হালকা জ্যাকেট রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও ২–৩ ডিগ্রি কমতে পারে, এবং নভেম্বরের শেষে কলকাতায় ঘন কুয়াশার প্রবণতা বাড়বে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top