ঝালদার কাউন্সিলার তপন কান্দু হত্যার ঘটনায় ঝাড়খন্ড থেকে ধৃত সার্ফ শুটার কলেবর সিংকে লাগাতার জেরার পর গ্রেপ্তার করা হল তপন কান্দুর দাদা নরেন কান্দু এবং আশিক খানকে।কলেবর সিং এবং নরেন কান্দুকে মুখোমুখি বসিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে জেরা।
জেলার পরেই পুলিশ এই ঘটনায় অভিযুক্ত আসিক খানের নাম পায়। গতকাল দিনভর দফায় দফায় জেরার পর সন্ধ্যের দিকে নরেন কান্দু এবং আসিক খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।আজ তাদের দুজনকে পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হবে। তপন কান্দু হত্যা কাণ্ডে দাদা নরেন কান্দুকে গ্রেপ্তারের পরেই এই ঘটনার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে দুই ভাইয়ের পুরোনো পারিবারিক বিবাদ।
গত ১৩ই মার্চ ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলার তপন কান্দুকে গুলি করে খুন করার তিন সপ্তাহের মধ্যে পর পর চার জনকে গ্রেপ্তার করে ঝালদা কাণ্ডের ঘটনার প্রায় রহস্য উন্মোচন করে ফেলল সিট এবং পুরুলিয়া পুলিশ।গতকাল দিনভর পুরুলিয়া মফঃস্বল থানা ক্যাম্পাসের ভেতর ক্ষণিকা পুলিশ গেস্ট হাউসে এনে ধৃতদের জেরা করা হয়।
জেরায় ছিলেন স্বয়ং পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপার এস.সেলভা মুরুগান,আই জি পশ্চিমাঞ্চল সুনীল চৌধুরী।তপন কান্দু হত্যার ঘটনায় ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার জরিডি থানার এলাকার সার্ফ শুটার কলেবর সিংকে জেরা করার পর ঝালদা থেকে নিয়ে আসা হয় এই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত তপন কান্দুর দাদা নরেন কান্দুকে।এর পরেই নরেন কান্দু এবং কলেবর সিংকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার পর আশিক খানের নাম পায় সিটের সদস্যরা।
এরপরে গতকাল সন্ধ্যার দিকে আসিফ খান এবং নরেন কান্দুকে গ্রেপ্তার করা হয়।আশিক খানের বাড়ি ঝালদা শহরের উপকণ্ঠে ঝালদা বাগমুন্ডি রোডের ওপর কুটিডি গ্রামে। পুলিশ এবং ঝালদার বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় কুড়িটি গ্রামের একটি ফাঁকা বাড়িতে কয়েকদিন ধরেই ডেরা বেঁধেছিল ঝাড়খণ্ডের কলেবর সিং।কুটিডি গ্রামের নির্জন জায়াগায় থাকা এই ফাঁকা বাড়িটির মালিক আশিক খান।
আর ও পড়ুন সব স্কুলে একই রঙের পোশাক, এই নিয়ে শুরু হলো প্রতিবাদ
আশিক খান ধূপের ব্যাবসা করতো বলে জানায় প্রতিবেশিরা।তবে ওই বাড়িটি গ্রামের একটু নির্জন জায়াগায় থাকায় প্রতিবেশির কিছু বুঝে উঠতে পারেননি।গুলি কাণ্ডের দিনে বাইকে করে যে তিনজন দুষ্কৃতীর উপস্থিতি জানা গেছে তার মধ্যেই ছিল কলেবর সিং।১৩ই মার্চ ঘটনা ঘটার পরেও আশিক খানের ওই নির্জন বাড়িতে গিয়ে ঢুকে পড়েছিল কলেবর সিং বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।আশিক খানকে ধরার পরেই কুটিডি গ্রামের ওই বাড়িটি ঘিরে ফেলে পুলিশ।
এদিকে তপন কান্দুর হত্যাকাণ্ডকে পুলিশ দুই ভাইয়ের পারিবারিক বিবাদের কারণ বললেও তা মানতে নারাজ তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দু।তিনি বলেন এই ঘটনায় পারিবারিক বিবাদ নয় রাজনৈতিক কারণ রয়েছে যেখানে অনেকেই যুক্ত রয়েছেন।
অন্যদিকে তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু জানান। চারজন গ্রেপ্তার হলেও আরো অনেকেই রয়েছেন তাদেরকেও ধরা হোক। তিনি দোষীদের ফাঁসির সাজা এবং আবারও এই ঘটনার সি বি আই তদন্তের দাবি জানান।যদিও গত ১লা এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্ট ঝালদার কাউন্সিলার তপন কান্দু হত্যাকাণ্ডের তদন্ত সিট চালিয়ে যাবে বলে নির্দেশ দেন।