দেশ – ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন এবার আর শুধু বিহারে সীমাবদ্ধ থাকছে না। নির্বাচন কমিশনের সদ্য জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সারা দেশেই শুরু হতে চলেছে Special Intensive Revision (SIR)। ২৪ জুন কমিশনের জারি করা আদেশে জানানো হয়েছে, নির্বাচনী তালিকার অখণ্ডতা রক্ষার জন্য ও সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের স্বার্থে এই বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
কমিশনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই সংশোধন প্রক্রিয়া কীভাবে এবং কবে শুরু হবে, তার বিস্তারিত সময়সূচি খুব শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। যদিও জুন মাসেই এই পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
এই সংশোধন প্রক্রিয়ায় অযোগ্য ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। এক হলফনামায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, আধার, ভোটার আইডি ও রেশন কার্ড—এগুলি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, শুধুমাত্র পরিচয় যাচাইয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।
এই প্রসঙ্গে, SIR-এর বৈধতা নিয়ে একটি মামলার শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে, যা আগামী ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে তার আগেই এই বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়াকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে।
বিশেষত বিহারে শুরু হওয়া SIR ঘিরে একাধিক প্রতিবাদ দেখা দিয়েছে। শুক্রবার সংসদ ভবনের বাইরে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের একাধিক নেতানেত্রী এই প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে ধর্নায় বসেন। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্না দেন রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, তৃণমূলের মিতালি বাগ সহ বহু সাংসদ। তাঁরা ‘SIR’ লেখা প্রতীকী কাগজ ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান এবং মকরদ্বার পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করেন।
এই ইস্যু ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সংসদের অন্দরমহলও। তৃণমূল সাংসদ মিতালি বাগ অভিযোগ করেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের উপর অন্যায়ভাবে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এর পাল্টা জবাব দেন বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।
তীব্র হট্টগোলের ফলে রাজ্যসভার অধিবেশন বেলা ১২টা পর্যন্ত এবং লোকসভার অধিবেশন দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতুবি রাখতে হয়। নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপকে ঘিরে দেশজুড়ে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে।
