শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির পাঁচ বিধায়কের সাসপেনশন অর্ডারের বিরুদ্ধে আদালতে যাচ্ছে বিজেপি? রাজ্য বিধানসভার সদ্যসমাপ্ত বাজেট অধিবেশনে শাসক ও বিরোধী পক্ষের বিধায়কদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল। আর তার জন্যই সাসপেন্ড করা হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির পাঁচ বিধায়ককে। রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাসপেনশনের অর্ডার দেন।আর সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই আদালতে যেতে পারে বিজেপি পরিষদীয় দল বলে শণিবার সূত্রের খবরে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত,এর আগে থেকেই সাসপেনশনে রয়েছেন বিরোধীদলের আরও দুই বিধায়ক। জানা গেছে,সংসদীয় তথা পরিষদীয় প্রথা অনুযায়ী, সাসপেনশন চলাকালীন বিধানসভার ভিতরের অলিন্দ বা তাঁর নিজের ঘরেও বিরোধী দলনেতা ঢুকতে পারবেন না। এই বিষয়ে তাঁকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। এই সময়ের জন্য দৈনিক বরাদ্দ ভাতাও বিরোধী দলনেতা বা সাসপেনশনে-থাকা কোনও বিধায়ক পাবেন না বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে,বিজেপি-র একটি সূত্র থেকে পাওয়া খবর বলছে, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে চায় বিজেপি এবং এক্ষেত্রে তারা সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে তাদের ‘হাতিয়ার’ বানাতেই পারে। কিন্তু কি সেই রায়।জানা গেছে,২০২১ সালের জুলাই মাসে মহারাষ্ট্র বিধানসভা থেকে ‘অসংসদীয়’ আচরণের অভিযোগে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল ১২ জন বিজেপি বিধায়ককে। সেই সময় মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান সেই বিধায়কগণ। ২০২২ এর জানুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের সাসপেনশন বাতিল করে দিয়েছিল।
সূত্রের খবর,সে সময় সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি এ এম খান উলকর, বিচারপতির দীনেশ মহেশ্বরী ও বিচারপতি সিটি রবিকুমার। তারাই ওই রায় দেন বলে জানা গেছে। আর এবার সেই রায়কে ‘হাতিয়ার’ করেই বিজেপি পরিষদীয় দল আসরে নামতে চায় বলে জানা গেছে।সূত্রের খবর,বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ছাড়াও এই অধিবেশন থেকে ‘অসংসদীয় আচরণ’-এর জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা, শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, জয়পুরের বিধায়ক নরহরি মাহাত ও ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মনকে।
আর ও পড়ুন সল্টলেকের গেস্ট হাউসে নিয়ে এসে তরুণী ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
ওদিকে, রাজ্যপালের বাজেট বক্তৃতার দিনেও গন্ডগোলের জন্য আগেই সাসপেন্ড করা হয়েছিল নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী এবং পুরুলিয়ার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়কে। তাঁদের বিরুদ্ধেও এই একই অভিযোগে শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে বলেই জানানো হয়েছে বিজেপি পরিষদীয় দলকে। এই ঘটনার পরেই তাঁরা সবাই একসাথেই আদালতে যাবেন ঠিক করেছেন বলে সূত্রের খবরে জানা যাচ্ছে।যদিও, বিজেপি পরিষদীয় দলের সাসপেন্ডেড কোনও সদস্য এই নিয়ে কিছু বলেন নি।
তবু, বিজেপির পরিষদীয় দলের প্রবীণ সদস্য নাটাবাড়ির বিধায়ক মিহির বলেন, ”নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের এই ভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করে রাখা যায় না। কারণ, তাঁরা মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিধানসভায় মানুষের কথা বলতে এসেছেন। তাই বিধায়কদের অধিকারের জন্য আমরা লড়াই করব। সেই লড়াই করতে যতদূর পর্যন্ত যেতে হয়, বিরোধী দলনেতার নেতৃত্বে আমরা ততদূর পর্যন্ত যাব।”