১৭ ডিসেম্বর, বিয়ের পর ওই যে হাত ধরেছিলেন, সেই হাত ধরেই পথ চলা।ইতালি, মেক্সিকো, স্পেন, ব্রাজিল, রাশিয়া- না ঘুরতে নয়, ফুটবল দেখতে। দিনের পর দিন টাকা জমিয়ে প্রতিটি ফুটবল দেখতে যেতেন এই ফুটবলপাগল যুগল।একদিনের খাওয়া মিস করলেও মিস করতেন না কোনও ফুটবল ম্যাচ।রাশিয়া থেকে ফিরে আসন্ন কাতার বিশ্বকাপে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই আশা অসম্পূর্ণই রয়ে গেল তাঁদের। আর দেখা হবে না কাতার বিশ্বকাপ। শেষ ৩৬ বছরের বিশ্বকাপ সফরে টানতে হল ইতি। ৭৮ বছরের স্ত্রীকে রেখে চলে গেলেন পান্নালাল চট্টোপাধ্যায়।বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পান্নালাল চট্টোপাধ্যায়।
কলকাতা ময়দানে ‘পানুদা’ বলেই পরিচিত ছিলেন পান্নালালবাবু।খিদিরপুরে রাম কমল স্ট্রিটের এই দুই বাসিন্দা একসঙ্গে ১০টি বিশ্বকাপ মাঠে বসেই দেখেছিলেন। আর এরপরেই তাঁরা হয়ে যান তিলোত্তমার ‘সেলিব্রিটি দম্পতি’।ফুটবলপ্লেয়ারদের কাছেও তাঁরা ছিলেন খুব প্রিয়।১৯৮২ সালের স্পেন থেকে শুরু হয় তাঁদের ফুটবল দেখার যাত্রা।
নিজের চোখের সামনে দেখেছেন মারাদোনার বিখ্যাত ‘হ্য়ান্ড অফ গড’। কিংবদন্তি পেলের সঙ্গে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে তাঁদের দেখা হয়েছিল। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল আইকন তাঁদের দেখে চিনতে পেরে বলেই ফেলেছিলেন, “তুমি আবার এসেছ!” পান্নালাল বাবু, মেওয়ালাল, রশিদ এবং সলিমদের সঙ্গেও ফুটবল খেলেছেন। কলকাতা ময়দানের প্রায় প্রতিটি ক্লাবেই যেতেন তিনি। আজ মহামেডান ক্লাবে প্র্যাকটিস শুরুর আগে পান্নালালের জন্য খেলোয়াড়রা এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।