দিনের পর দিন শ্মশানে দাহ হচ্ছে, অথচ নজরদারি নেই প্রশাসনের। বছরের পর বছর ধরেই ক্যানিংয়ের ১ নং দিঘীরপাড়ের শ্মশানে শবদাহ করা হয়, কিন্তু কোনরকম নজরদারি ছাড়াই। এতদঅঞ্চলে সব থেকে বড় শ্মশান এটি। সম্প্রতি ক্যানিংয়ে ইলেকট্রিক চুল্লি চালু হলেও এই শ্মশানেই শবদাহ সব থেকে বেশি হয়। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এখানে শবদাহ হলেও প্রশাসনের তরফে কোনরকম নজরদারি চালানো হয় না।
এখানে দাহ করতে এলে কোনরকম মৃত্যুপঞ্জী লাগে না। যে কেউ যখন তখন এসে শব দাহ করে চলে যান। কিন্তু হাঁসখালির ঘটনা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। শনিবার সকালে ক্যানিং থানার আইসি আতিবুর রহমান নিজে যান শ্মশানে। সেখানে গিয়ে আশপাশের সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলেন। কিভাবে এখানে নজরদারি বাড়ানো যায় সে বিষয়ে ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সাথে আলোচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।
প্রায় শতাধিক বছরের পুরানো এই শ্মশান। আশপাশের অনেকেই বলছেন জন্মের পর থেকেই দেখছি এখানে দাহ হয়। আগে শবদাহের জায়গাটা খোলা ছিল, মাটির ছিল। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে এই শ্মশান চত্বরে স্থানীয় ব্লক প্রশাসন, পঞ্চায়েতের তরফে উন্নয়ন করা হয়েছে।
আর ও পড়ুন বালি মাফিয়াদের আক্রমনের শিকার হলো পুলিশ
শ্মশানে ছাউনি হয়েছে। কংক্রিটের চুল্লি তৈরি হয়েছে, পাশাপাশি শ্মশানযাত্রীদের বসার জন্য একটি ছাউনির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কিন্তু, যে দেহগুলি দাহের জন্য আসছে সেগুলি কোথাও নথিভুক্ত করার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। প্রশাসনের উদ্যোগে মৃতদেহের মৃত্যুপঞ্জী দেখে নেওয়ার কোন ব্যবস্থাও গড়ে ওঠেনি। ফলে যে কোন মুহূর্তে যেকোন দিনই হাঁসখালির ঘটনার পুনরাবৃত্তি এখানে ঘটতে পারে বলেই দাবি স্থানীয়দের।
তবে হাঁসখালির ঘটনা সামনে আসতেই এলাকার মানুষ চাইছেন এখানে নজরদারি শুরু করুক প্রশাসন। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অন্নপূর্ণা কুন্ডু ও বলেন, ছোট থেকে দেখে এসেছেন এখানে এমনিতেই দাহ হচ্ছে। পঞ্চায়েতের তরফে শ্মশানের নানা উন্নতি করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের তরফে আলাদা করে কোন নির্দেশ দেওয়া হয়নি মৃত্যুপঞ্জী দেখাশোনা কিম্বা শবদাহ রেজিস্টার করার। উদ্ধতন কতৃপক্ষ নির্দেশ দিলেই এ সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যাবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন ক্যানিং ১ ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর দাস।
শুধু ক্যানিংয়ের ১ নং দিঘীরপাড়ের এই শ্মশান নয়, গোটা দক্ষিণ ২৪ পরগণা জুড়েই প্রায় প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সেখানকার মানুষের সুবিধার জন্য এরকম একটি করে গ্রামীণ শ্মশান রয়েছে। সেখানেও কোনরকম আলাদা নজরদারি নেই বলেই দাবি স্থানীয়দের।