শ্যামসুন্দর জিউ মন্দিরের পুর্বতন ট্রাস্ট বোর্ডের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে থানায় অভিযোগ। খড়দহের প্রাচীন শ্যামসুন্দর জিউ মন্দিরের পুর্বতন ট্রাস্টি বোর্ডের বিপুল আর্থীক দুর্নীতির বিরুদ্ধে খড়দহ থানায় লিখিত এফ আই আর দায়ের করলেন রাজ্য সরকারের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ জেনারেল অফ ট্রাস্টি বিপ্লব রায়। শুক্রবার দুপুরে খড়দহ থানায় এসে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ জেনারেল বিপ্লববাবু সাংবাদিকদের বলেন,আমি একটি এফ আই আর দায়ের করতেই থানায় এসেছি।
তার কথায় দ্বায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে আমরা যে ভাবে অনুসন্ধান করেছি,তাতে দেখা গেছে গত দশ বছর ধরে এই প্রাচীন মন্দিরের কোনরকম অডিট হয়নি। এমনকি মন্দিরের প্রতিদিনের আয়ের কোন উল্লেখ নেই। কত পরিমাণ সোনা-রুপা বা অন্যান্য অলঙ্কার ভক্তদের মারফত মন্দিরের দেবতাকে দেওয়া হয়েছে তার কোন হিসাব নেই। মৃত ব্যক্তিদের উদ্দ্যেশ্যে টাকার বিনিময়ে যে সমস্ত স্ল্যাভ বসানো হয়েছে তারও কোন হিসেব নেই।
আরও পড়ুন – দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার মেলা
এক কথায় বলতে গেলে, ওই মন্দিরের দশ বছরের কোন আয়-ব্যায়ের কোন হিসাবই নেই। তাছাড়া এখানে একজন ব্যাক্তি একটি বাড়ি মন্দিরকে দান করেছিল। কিন্তু দেবত্ব সম্পত্তী হওয়া সত্ত্বেও তা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তার দাবি, এভাবে দেবত্ব সম্পত্তী বিক্রি করা বেআইনি। আদালতে অনুমতি ছাড়া ওই জমি বিক্রি করা সম্পুর্ন আইন বিরুদ্ধ। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ জেনারেল অফ ট্রাস্টি বিপ্লব রায় আরও বলেন, মন্দিরের পুর্বতন ট্রাস্টি বোর্ডের দুর্নীতি এখানেই শেষ নয়।
ওই দেবত্ব সম্পত্তী বিক্রির সময় এগ্রিমেন্টে দেখানো হয়েছিল ১৯ লক্ষ্য টাকা। আর দলীলে দেখানো হয়েছে সাড়ে পনেরো লক্ষ্য টাকা। ব্যাঙ্কে জমা পড়েছিল সাড়ে পনেরো লক্ষ্য টাকা। আশ্চর্যজনক ভাবে সেই টাকা তিন-চার দিনের মধ্যে অন্য একটি একাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যায়। এই মুহূর্তে পাঁচশো বছরের প্রাচীন শ্যামসুন্দর জিউ মন্দিরের একাউন্ট এখন জিরো। তাই এই সমস্ত বিষয় গুলো উল্লেখ করে এদিন খড়দহ থানায় এফ আই আর দায়ের করলাম।
তার কথায়, পুর্বতন ট্রাস্টি বোর্ডের বিরুদ্ধে হলেও মুলত অভিযোগ তদানীন্তন সময়কালের দুই কোষাধ্যক্ষ সুবিমল গোষ্মামী ও দেবমাল্য গোষ্মামীর বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে তারা তাদের দায় এড়াতে পারেন না। প্রসঙ্গত, আনুমানিক মাস দুয়েক আগে খড়দহের শ্যামসুন্দর জিউ মন্দিরে ট্রাস্টি বোর্ডের বিরুদ্ধে বিপুল আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে উঠেছিল।
সেই সময় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ জেনারেল অফ ট্রাস্টির উদ্যোগে ওই মন্দিরের পুর্বতন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের হটিয়ে একটি নতুন অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই মুহূর্তে তারাই মন্দিরের দেখভালের দায়িত্বে। যদিও বিপ্লববাবু বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা হাইকোর্টের বলিষ্ঠ একজন আইনজীবীকে নির্বাচন অফিসার হিসেবে নিয়োগ করেছি। মন্দির কমিটির নির্বাচন পক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে।