শ্রদ্ধা কাণ্ডের ছায়ায় শিলিগুড়িতে, স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় দুটি বস্তা থেকে টুকরো দেহ উদ্ধার পুলিশের

শ্রদ্ধা কাণ্ডের ছায়ায় শিলিগুড়িতে, স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় দুটি বস্তা থেকে টুকরো দেহ উদ্ধার পুলিশের

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

শ্রদ্ধা কাণ্ডের ছায়ায় শিলিগুড়িতে, স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় দুটি বস্তা থেকে টুকরো দেহ উদ্ধার পুলিশের। শ্রদ্ধা কাণ্ডের ছায়ায় শিলিগুড়িতে, স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় দুটি বস্তা থেকে টুকরো দেহ উদ্ধার পুলিশের। বিপর্যয় মোকাবিলা টিমকে নিয়ে পুলিশের তল্লাশিতে শুক্রবার ক্যানেলের জলাশয় থেকে একটি বস্তায় মহিলার মাথা ও অন্যটিতে শরীরের অংশ উদ্ধার।ক্যানেলের জলে দেহ থেকে ১০০মিটার দূরত্বে মেলে মৃত মহিলার মস্তিক।

 

ঘটনায় চমকে উঠেছেন এলাকা বাসিরা। দেহ থেকে মাথা চ্ছেদ করে কেঁটে দুটি বস্তায় ক্যানেলের জলে স্ত্রীর দেহ ভাসিয়ে দেয় খুনে অভিযুক্ত স্বামী মহম্মদ আনসারুল। প্রমান লোপাটে ক্যানেলের জলেই খুনের পর ধারালো অস্ত্র ফেলে দিয়েছিল সে। খুনের ঘটনার দিনে স্ত্রীকে বিরিয়ানি খাইয়ে সারপ্রাইজ উপহার দেওয়ার কথা বলেই শিলিগুড়ির অদূরে ফাঁসীদেওয়ার গোয়ালটুলি ক্যানেল সংলগ্ন নির্জন অরণ্যে নিয়ে গিয়েছিল স্বামী। সেখানেই গত ২৪শে ডিসেম্বর রাতে নৃশংস ভাবে খুন করা হয় মহিলাকে। পুলিশ সূত্রের খবর পুরো পরিকল্পনা মাফিক করা হয়েছে। আগে থেকেই স্ত্রীকে খুন করার পরিকল্পনা কষে স্বামী আনসারুল।

 

সেমতই দুটি বড় আকৃতির বস্তা ও কুপিয়ে খুনের জন্য ধারালো ছুরি কিনেছিল সে। ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা সাজিয়ে বেশ কয়েকদিন ফাসিদেওয়ার নির্দিষ্ট জায়গাও চিহ্নিত করে এসেছিল সে। জেরায় পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকদের সাঁড়াশি চাপের মুখে অভিযুক্ত জানিয়েছেন বিউটি পার্লারে কাজ শেষে৩.৩০থেকে ৪টে নাগাদ বেড়িয়ে ছিলেন রেণুকা। এরপর চিলড্রেন পার্ক ও মহাবির স্থানে পৌছায় সে। সেখান থেকে স্ত্রীকে প্রেম নিবেদনে নানা কায়দায় ভুলিয়ে বাইকে চাপিয়ে শহরে ঘোরাতে নিয়ে যায় স্বামী। শহর ঘুরিয়ে গেটবাজারের বিরিয়ানির দোকানে পৌছায়। সেখানে স্ত্রীর সঙ্গে পছন্দের বিরিয়ানী দুজনে খাওয়া দাওয়া করে খুনের আসামি আনসারুল।

 

এরপরই স্ত্রী রেণুকা খাতুনকে সেজানায় সারপ্রাইজ রয়েছে তার জন্য। স্ত্রীকে সারপ্রাইজ দেওয়ার নাম করে সোজা ফাঁসীদেওয়ার গোয়ালটুলি এলাকার নির্জন অরণ্যে। সেখানে পৌঁছে স্ত্রীর নির্জন এলাকায় গাঁ শিউরে ওঠে। কি সারপ্রাইজ স্বামীর কাছে জানতে চায় সে। সেসময়ই একেবারে রূপলি পর্দার সাসপেন্স থ্রিলারকেও হার মানিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীর গলা কেটে খুন করে সে। মৃত্যু নিশ্চিত করতেই গাড়িতে থাকা হাঁসোয়া দিয়ে দেহের শরীর থেকে মাথা আলাদা করে দুই খন্ড করে দেয়।

 

এরপর গাড়িতে থাকা দুটি বস্তায় একটিতে মাথা ও অন্যটিতে দেহের টুকরো অংশ ভরে তা র বস্তার মুখে পাথর ঝুলিয়ে ক্যানেলে ভাসিয়ে দেয়। একেবারে রীতিমতো নিখুঁত পরিকল্পনা অনুযায়ী ক্যানেলের নির্দিষ্ট দূরত্বে মাথা ও দেহের দুটি বস্তা ফেলেছিল যুবক। জানা যাচ্ছে মূলত সন্ধ্যার অন্ধকার সময়ের অপেক্ষাতেই স্ত্রীকে নিয়ে শহর চত্ত্বরে বাইকে করে ঘুরিয়ে ছিল সে। কারন সন্ধ্যার সময় ওই এলাকা জন মানুষের আনাগোনা থাকে না। পুলিশ সূত্রের খবর খুনের কয়কদিন আগে এলাকা ঘুরে রেইকি চালায় যুবক।

 

খুনের জন্য জায়গা নির্ধারন করতে শহর থেকে দূরে আরও বেশ কয়েকটি স্থানে ঘুরে দেখেছিল সে। এদিন রাতেই স্ত্রীকে খুন করে এসে শ্বশুরের সঙ্গে নিখোঁজের অভিযোগ জানাতে থানায় পৌছায় যুবক। বৃহস্পতিবার ধৃতকে নিয়ে এলাকায় ঘটনার পুনঃঘটন করা হলেও দেহ না মেলায় শুক্রবার মহানন্দা ক্যানেলের লক গেট খুলে জল নেমে আসতেই বিপর্যয় মোকাবিলা টিমকে নিয়ে দুটি বস্তায় মহিলার টুকরো দেহ উদ্ধার করে। এদিকে স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহ ও লাগাতার দাম্পত্য কলহের জেরেই খুন। পুলিশ কমিশনার জানান তাদের দাম্পত্য অশান্তি ঝামেলা লেগেই ছিল।

 

স্ত্রীর বিউটি পার্লারের কাজ পছন্দ করতেন না স্বামী। এমনকি সেখানেই পরকীয়া জড়িয়ে পড়েছে তা সন্দেহ ছিল স্বামীর। খুনে ব্যবহারের অস্ত্রটির খোঁজ চলছে।উল্লেখ্য শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৪৩নম্বর ওয়ার্ডের দাদাভাই কলোনি এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ আনসারুল। পার্শ্ববর্তী ৪২নাম্বার ওয়ার্ডের প্রকাশ নগর নিবাসী রেণুকা খাতুনের সঙ্গে ২০১৬সালে বিবাহ হয় তার।

আরও পড়ুন – শশী, জয়প্রকাশ, সায়ন্তিকা-র নিশানায় শুভেন্দু

তাদের এক সাত আট বছরের শিশু সন্তান রয়েছে। ।স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছে সন্দেহ থেকে স্ত্রী বিউটি পার্লারের কাজে যেতে বাধা দিয়ে লাগে খুনে অভিযুক্ত স্বামী। নিখোঁজের অভিযোগের ভিত্তিতেই অভিযুক্ত জেরায় পুলিশকে জানায় খুনের বিষয়ে।পুলিশ সূত্রের খবর অভিযুক্ত ও মৃতের মোবাইল লোকেশন ধরেই আনসারুলের ওপর সন্দেহ গাঢ় হয় পুলিশের। প্রতিবেশীরা জানায় স্বামী ও স্ত্রী উভয়ই একেওপরকে পরকিয়ার সম্পর্কে সন্দেহ করতো।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top