বৃন্দাবন -বৃন্দাবনের বাঁকেবিহারী মন্দির। বসন্ত পঞ্চমীর দিন থেকে এখানে হোলি খেলা শুরু হয়।রীতির মধ্যে রয়েছে উৎসবের আগে একাদশী থেকে বিশেষ আচার অনুষ্ঠানও। কলকাতার সঙ্গেও এর নিবিড় যোগ রয়েছে। তিলোত্তমার ফুল ছাড়া সেখানকার ঠাকুরজির গায়ে রং ওঠে না।
সম্প্রতি এই মন্দিরে ঠাকুরজিকে উৎসর্গ করা অর্ঘ্য নিয়ে চর্চা উঠেছিল হিন্দুত্ববাদীদের মধ্যে। ধর্মীয় আবেগের কথা তুলে তারা দাবি করেছিল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্য মুসলিম শিল্পীদের তৈরি পোশাক নিষিদ্ধ করতে হবে। সেই প্রস্তাবই উড়িয়ে দিলেন স্বয়ং বৃন্দাবন বাঁকেবিহারী মন্দিরের পুরোহিত ।
তাঁরা পরিষ্কার করে হিন্দুত্ববাদীদের দাবি খণ্ডন করে জানিয়ে দিয়েছেন, যে কোনও সম্প্রদায়ের মানুষ, সে হিন্দু হোক, মুসলমান হোক বা খ্রিষ্টান, সকলের বিশ্বাস ও ভক্তি প্রাধান্য পাবে সবার আগে। সকলের দেওয়া পুজোর অর্ঘ্য তাঁরা সাদরে গ্রহণ করবেন।
কৃষ্ণের জন্মভূমি মুক্তি সংঘর্ষ ন্যাসের সভাপতি দীনেশ ফলাহারি প্রস্তাব দিয়ে জানিয়েছিলেন, অ-হিন্দুদের তৈরি পোশাক ঠাকুরকে প্রদান করা পাপ হবে। এর পরই যত আলোচনার শুরু।
মন্দির কর্তৃপক্ষের সদস্য জ্ঞানেন্দ্র কিশোর গোস্বামী জানিয়েছেন, তাঁরা মুসলমান তাঁতিদের তৈরি পোশাক বন্ধ করার একটি প্রস্তাব পেয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু তার থেকেও প্রধান উদ্বেগ ঠাকুরজির জন্য দেওয়া পোশাকের পবিত্রতা বজায় রাখা। তাঁর কথায়, “যদি মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ ঠাকুরজির প্রতি বিশ্বাস রাখেন, তাহলে আমরা তাঁদের পোশাক গ্রহণে কোনও রকম আপত্তি করব না।”
তাঁদের যুক্তি, পোশাক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আজ অবধি কোনও পরিবর্তন আসেনি। যে কেউ ঠাকুরজিকে পোশাক দিতে পারেন। বস্তুত, ঠাকুরজির মন্দিরের নকশা, মুকুট, জরদৌসি পাগড়ি, বেশিরভাগটাই মুসলমানদের তৈরি। পবিত্রতা বজায় রাখতে সবই কি প্রত্যাখান করা উচিত? সেই প্রশ্নও তোলেন মন্দিরের পুরোহিতরা।
