এই প্রথম আপনি বিচারকের ভূমিকায়। কেমন লাগছে?
•• খুব ভাল লাগছে আবার তার সঙ্গে আমি বেশ নার্ভাসও হয়ে গিয়েছিলাম। এর আগে অনেকবারই অতিথি হয়ে বিভিন্ন রিয়্যালিটি শোয়ে এসেছি। কিন্তু বিচারক হয়ে এই প্রথম। এর আগে আমার ধারণাই ছিল না এই ধরনের শুটিংয়ে কীভাবে শুটিং হয় বা কীভাবে রিঅ্যাকশন দিতে হয়। কাল যখন বাড়ি ফিরলাম সইফ জিজ্ঞাসা করল, ‘কাজ কেমন হল? তুমি সব পারছ তো?’ আসলে সইফও আমার এই কাজটা নিয়ে খুবই উদগ্রীব। এখন অবশ্য শুটিং করতে করতে কাজটার সঙ্গে পরিচিত হয়ে গেছি।
• হঠাৎ টেলিভিশনে আসার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?
•• এর আগে বিচারক হয়ে রিয়্যালিটি শোয়ে আসার যে অফার ছিল না তা নয়। কিন্তু আমি রাজি হইনি নার্ভাসনেসের কারণে। কারণ, এই মূহূর্তে টেলিভিশন সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং মিডিয়াম। এর মাধ্যমে কোটি কোটি পরিবারে পৌঁছে যাওয়া যায়। ডান্স ইন্ডিয়া ডান্সের বিচারক হওয়ার প্রস্তাবটা যখন এল তখন স্থির করলাম এবার নার্ভাসনেস কাটাতেই হবে। (হেসে) কারণ এটাই টেলিভিশনের একমাত্র শো, যেটা আমি আর সইফ দেখি। এটা এমন একটা মঞ্চ যেখানে আম জনতা তাদের নাচের দক্ষতা দেখিয়ে নিমেষে লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয় জয় করছে। কাজেই আর দূরে সরে থাকলে চলবে না। (হেসে) এই শো দেখতে দেখতে হয়ত আমাকেও দর্শক নতুন করে ভালবাসবেন।
• আপনি কি মনে করেন ধ্রুপদী নৃত্যের তালিম থাকলে তবেই সব ধরনের নাচ অনায়াসভাবে করা যায়?
•• আমাদের দেশে তো নানা ধরনের নৃত্যশালী রয়েছে। ভরতনাট্যম আছে, ওড়িশি আছে, কুচিপুরি আছে। এই তো গতকালই একজন প্রতিযোগী ওড়িশি নেচে আমাদের মন ছুঁয়ে গেল। এই ভারতীয় নৃত্যশৈলীতে যদি দক্ষতা থাকে তাহলে আমার মনে হয় সব ধরনের নাচই দক্ষতার সঙ্গে করা সম্ভব।
• ‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’ গতবারের তুলনায় কতখানি আলাদা হতে চলেছে?
•• ফরম্যাটের একটু বদল হয়েছে। এবার প্রতিযোগীদের দেশের চারপ্রান্ত অনুসারে চারটি দলে ভাগ করা হয়েছে। একক প্রতিযোগীতার সঙ্গে থাকছে দলগত প্রতিযোগীতাও। ৩৬০ ডিগ্রি মঞ্চে ২০০ ক্যামেরায় শুটিং হচ্ছে। এত জমকালো ভাবে এই প্রথম কোনও রিয়্যালিটি শোয়ের শুটিং হচ্ছে।
• ঠাকুরদা রাজকাপুর থেকে শুরু করে কাপুর পরিবারের অনেকেই ভাল ডান্সার। এঁদের মধ্যে কার নাচ আপনাকে বেশি প্রভাবিত করেছে?
•• আমাদের পরিবারের রক্তে নাচ আছে। নাচের একটা পরম্পরা আছে। ঠাকুরদা রাজকাপুরের নাচের সঙ্গে যেমন শাম্মী কাপুরের নাচের তুলনা করা যায় না তেমনই রমবীরের নাচের সঙ্গে আমার দিদি করিশ্মার নাচের তুলনা করা যায় না। প্রত্যেকের নাচের স্টাইল আলাদা আলাদা। আর এটাই আমাদের পরিবারের বৈশিষ্ট্য। কারোর নাচে কারও প্রভাব নেই।
• বিচারক হিসেবে প্রতিযোগীদের কোন কোন দিকে নজর দেবেন?
•• আমি তো বিচারক হিসেবে একেবারে নতুন। অপর দুই বিচারক বসকো মারটিস ও রাফতার প্রতিযোগীদের টেকনিক্যাল দিকগুলো দেখবেন। আমার ফোকাস থাকবে প্রতিযোগীদের এক্সপ্রেশনের ওপর। নাচ তো কেবল হাত আর পায়ের চলন নয়, মুখের অভিব্যক্তির ওপর অনেকটাই নির্ভর করে। বলতে পারি, প্রথমবার বিচারকের আসনে বসে হৃদয় দিয়েই কাজ করব।
• আপনার কেরিয়ারে বেশ কিছু হিট ডান্স নাম্বার আছে। এর মধ্যে কোন নাচের শুটিং বেশ চ্যালেঞ্জিং লেগেছে?
•• কোনও একটার কথা তো বলা যাবে না। যতগুলো হিট নাম্বারে কাজ করেছি তার প্রত্যেকটাই আমার কাছে একইরকম চ্যালেঞ্জিইং। প্রত্যেকটা নাচেই সমান আনন্দ পেয়েছি। প্রতিটি নাচে আমার নজর থাকত এনার্জি লেভেল, পজিটিভিটি এবং এক্সপ্রেশনে।
• দিদি করিশ্মার কোন নাচটা বেশি ভাল লাগে?
•• ‘দিল তো পাগল হ্যায়’-এর ‘লেগয়ি লেগয়ি’ নাচটা।
• এই প্রথম ‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’-এ গ্র্যান্ড মাস্টার মিঠুন চক্রবর্তী নেই। কতটা মিস করবেন মিঠুন চক্রবর্তীকে?
•• মিঠুনদা আমার কাছে সুপারস্টার। ওঁর নাচ দেখেই আমরা বড় হয়েছি। ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স-এর সেটে মিঠুনদা থাকবেন না, এটা তো ভাবাই যায় না। ওঁকে গ্র্যান্ড মাস্টার হিসেবে পেলে বিচারক হিসেবে অনেকটাই সাহস বেড়ে যেত। এই শো-তেই একবার অতিথি হিসেবে এসে ওঁর জনপ্রিয়তা দেখেছি। যদি এই সিজনে ওঁকে অতিথি হিসেবেও পাই তবে অনেক শূন্যতা ভরে যাবে।
• কোন অভিনেত্রীর নাচ আপনার প্রিয়?
•• আমি ছোটবেলা থাকে শ্রীদেবীর ফ্যান। ওঁর নাচ ফলো করেই আজ আমি হিরোইন।
• টেলিভিশনে এলেন। ভবিষ্যতে আপনাকে কি ওয়েব সিরিজে দেখা যাবে?
•• (হেসে) এই মূহূর্তে ‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’ টার কথাই ভাবছি। কারণ টিভিতে এটাই আমার প্রথম কাজ।
• আর ছবির কাজ?
•• ‘ইংরেজি মিডিয়াম’ আর ‘গুড নিউজ’—দুটো ছবির কাজ শুরু হয়েছে। ‘ইংরেজি মাডিয়াম’ ছবিতে এই প্রথম ইরফান খানের মতো একজন দক্ষ অভিনেতার সঙ্গে কাজ করছি। দারুণ অভিজ্ঞতা।
• শিল্পী হিসেবে কোনও আক্ষেপ আছে?
•• ক্লাসিক্যাল নাচ হয়তো শিখিনি। কিন্তু ক্লাসিক্যাল নাচের ভক্ত আমি। এতদিন শিল্পী হিসেবে কাটিয়েও এখনও পণ্ডিত বিরজু মহারাজের সঙ্গে কোনও কাজ করা হয়নি—এটাই একমাত্র আক্ষেপ।
শ্রীদেবীর নাচ অনুসরণ করেই আজ আমি হিরোইন
শ্রীদেবীর নাচ অনুসরণ করেই আজ আমি হিরোইন
Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram