কলকাতা – কলকাতার অন্যতম বিখ্যাত সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজো এ বছর নানা কারণে আলোচনার কেন্দ্রে। DURGAPUJA 2025-কে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে উদ্যোক্তাদের টানাপড়েন নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
মূল উদ্যোক্তা তথা বিজেপি নেতা সজল ঘোষ অভিযোগ করেছেন, পুলিশ-প্রশাসন বারংবার নোটিস পাঠিয়ে হয়রানি করছে। তাঁর মতে, ইচ্ছে করেই তাঁদের পুজো বন্ধ করার চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা (CP Manoj Verma) জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের সুরক্ষার সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না। তিনি স্পষ্ট করে দেন, ভিড় নিয়ন্ত্রণই এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার।
এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিপি বলেন, মণ্ডপে যদি ভিড় ২-৩ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকে, তবে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই উদ্যোক্তাদের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতা জরুরি।
তিনি আরও জানান, সার্কুলেশন ঠিক রাখা আবশ্যক। কারও পুজো নিয়ে পুলিশের কোনো আপত্তি নেই, তবে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সজল ঘোষের অভিযোগ, পুলিশ অকারণে মণ্ডপ এলাকার ৪০ ফুটের রাস্তা গার্ডরেল দিয়ে মাত্র ১৫ ফুট করে দিয়েছে। তাঁর দাবি, এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড়ে যাচ্ছে।
তাঁর আরও অভিযোগ, এবছরের থিম ‘সিঁদুর অভিযান’ (Operation Sindoor)-এর অডিও-ভিস্যুয়াল লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো বন্ধ করতে বলেছে পুলিশ। উদ্যোক্তারা এতে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
শুধু তাই নয়, পুলিশ মেলা বা বক্স বাজানোতেও আপত্তি জানাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উদ্যোক্তাদের মতে, এগুলো বন্ধ হলে পুজোর আকর্ষণ অনেকটাই কমে যাবে।
সজল ঘোষ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি এমন হয়রানি চলতে থাকে, তবে তাঁরা পুজো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এমনকি দশমীর আগেই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার কথাও ভাবছেন।
আরও চরম পদক্ষেপ হিসেবে তিনি বলেন, প্রয়োজনে প্রতিমার মুখ কালো কাপড়ে ঢেকে দেওয়া হবে। তাঁর মতে, এই অবস্থায় আর আড়ম্বরপূর্ণ পুজো চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁদের লক্ষ্য শুধু জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পুজো নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু বিপুল ভিড় সামলানোই মূল চিন্তা।
শহরজুড়ে এই টানাপড়েন নিয়ে তীব্র কৌতূহল তৈরি হয়েছে। সাধারণ দর্শনার্থীরা ভাবছেন, শেষ পর্যন্ত এই বিখ্যাত পুজোর ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে।
প্রতিবছর লক্ষাধিক মানুষের ভিড় জমে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের মণ্ডপে। তাই পুলিশ ও উদ্যোক্তাদের দ্বন্দ্বে দর্শনার্থীরাই সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।
রাজনৈতিক রঙও লেগেছে বিতর্কে। বিজেপি নেতা হওয়ায় সজল ঘোষের অভিযোগ রাজনৈতিক মহলেও আলোচনার ঝড় তুলেছে।
