রাজস্থান – রাজস্থানের জয়সলমীরে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সূত্র ধরে উঠে এসেছে একটি ভয়াবহ সত্য এক শিক্ষিত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার যুবতী জড়িয়ে পড়েছে পর্নোগ্রাফি তৈরির অপরাধচক্রে। এই ঘটনার পর গোটা সমাজ স্তম্ভিত।
যে মেয়েকে নিয়ে বাবা-মা গর্ব করতেন, যার পড়াশোনার জন্য ঋণ নিয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনেছিলেন সেই মেয়েই এখন অভিযুক্ত এক পর্নো র্যাকেটের মূলচরিত্র। এই খবর সামনে আসতেই চোখের জলে ভেঙে পড়েন মেয়েটির বাবা। তিনি বলেন, “আমরা ওর শিক্ষার জন্য ঋণ নিয়েছিলাম। কখনও কল্পনা করিনি এমন কিছু ঘটবে।”ঘটনার সূত্রপাত, যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় একটি অশ্লীল ভিডিও। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং দ্রুতই বেরিয়ে আসে এর নেপথ্যের নির্মম সত্য।জয়সলমীরের ৭০ বছর বয়সী এক রাখাল অভিযোগ করেন, এক যুবতী ও তার পুরুষ সঙ্গী পর্যটকের ছদ্মবেশে তাঁকে প্রতারণা করে এবং একটি অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে। এই ভিডিওটি পরবর্তীতে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়।তদন্তে নামে পুলিশ এবং ১০ মে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দুই অভিযুক্তকে বিহারের শানু কুমার এবং উত্তরপ্রদেশের স্মৃতি জৈন। পুলিশ জানায়, এই দু’জন ভিন রাজ্যে ঘুরে ঘুরে নিরীহ মানুষকে টার্গেট করে অশ্লীল ভিডিও তৈরি করত এবং তা বিক্রি ও আপলোড করত বিভিন্ন পর্নো সাইটে।
অভিযুক্ত স্মৃতি জৈনের অতীত ঘেঁটে দেখা যায়, সে আগে থেকেও পর্নোগ্রাফি নির্মাণ ও চক্রের সাথে যুক্ত ছিল। পুলিশ সন্দেহ করছে, সে কোনও বড় পর্ন র্যাকেটের অংশ।
এই ঘটনার সবচেয়ে বেদনাদায়ক দিক হলো স্মৃতি ছিলেন একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। যে পেশার সাথে গৌরব, স্বপ্ন ও সম্ভাবনার সম্পর্ক, সেখানে এমন এক নারী কিভাবে জড়িয়ে পড়লেন অপরাধের গহ্বরে?এই ঘটনা আমাদের সমাজে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে শিক্ষা, টেকনিক্যাল যোগ্যতা বা চাকরি কি আদৌ নৈতিকতা শেখায়? প্রযুক্তির অপব্যবহার এবং নৈতিক অবক্ষয়ের এই দৃষ্টান্ত দেখিয়ে দিল, শুধু ডিগ্রি নয়, প্রয়োজন মূল্যবোধ, মানবিকতা ও সঠিক দিশা।পুলিশ ইতিমধ্যেই সাইবার ইউনিটের সাহায্যে এই চক্রের পুরো নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করার কাজ শুরু করেছে। প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোরতম আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
