বিশ্বের যে সমস্ত দেশ হাই-প্রোফাইল রাজনীতিবিদদের শেষ ঠাঁই। জেনে নিন সেই রাজনীতিবিদদের প্রসঙ্গে।কোন কোন দেশ তাদের জীবনের শেষ ঠাই হয়েছিলো। তারই কিছু ঝলক দেখে নিন এই প্রতিবেদনে।
পারভেজ মোশাররফ
পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ ২০০৮ সালে বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হওয়ার পর মোশাররফ যুক্তরাজ্যে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে যান। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে নির্বাচনে অংশ নিতে পাকিস্তান ফিরলে তাকে বেনজির ভুট্টোর হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। চিকিৎসার জন্য ২০১৬ সালে তাকে দুবাই যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়৷ বর্তমানে দুবাইতে বসবাস করছেন তিনি।
ইংলাক সিনাওয়াত্রা
ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাপক গণবিক্ষোভ এবং পরবর্তীতে সেনা অভ্যুত্থানে ২০১৪ সালে ক্ষমতাচ্যূত হন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা। তার জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন সেনাপ্রধান প্রায়ুথ চান-ওচা। ২০১৭ সালে ইংলাকের অনুপস্থিতিতে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ জানান, ইংলাক দুবাইয়ে অবস্থান করছেন।
স্পেনের রাজা হুয়ান কার্লোস
বর্তমানে উপসাগরীয় দেশটিতে অবস্থান করছেন স্পেনের প্রাক্তন রাজা হুয়ান কার্লোসও৷ নানা দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত হয়ে ২০১৯ সালে হুয়ান রাজা হিসাবে নিজের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। এরপর থেকে তার অবস্থান নিয়ে নানা ধরনের কথা শোনা যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালের আগস্টে হুয়ানের পরিবার নিশ্চিত করে তিনি আরব আমিরাতে বাস করছেন।
আর ও পড়ূন আচমকা লঙ্কা চিবিয়ে ফেলেছেন, ঝাল লাগছে, কী করবেন? জানুন
থাকসিন সিনাওয়াত্রা
ইংলাক সিনাওয়াত্রার মতো তাঁর ভাই থাকসিন সিনাওয়াত্রার ভাগ্যেও একই পরিণতি ঘটেছে৷ ইংলাকের আগে থাকসিনও ছিলেন থাইল্যান্ডের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। ২০০৬ সালে দুর্নীতির অভিযোগে সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখে তাকেও সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যূত হতে হয়। থাকসিনও এরপর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বাস করছেন।
বেনজির ভুট্টো
দীর্ঘদিন দুবাইতে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীত্বের দ্বিতীয় মেয়াদে বেনজির ভুট্টোর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফারুক লেগারি সরকার ভেঙে দেন। ১৯৯৭ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর বেনজির স্বেচ্ছানির্বাসনে যান। প্রায় এক দশক পর ২০০৭ সালে পাকিস্তান ফেরার পর আততায়ী তাকে হত্যা করে৷ আল কায়েদা হত্যার দায় স্বীকার করে।
মোহাম্মদ দাহলান
গাজা উপত্যাকায় ফাতাহ সংগঠনের নেতা ছিলেন ফিলিস্তিনি রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ দাহলান। ১৯৮১ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত আন্দোলনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অন্তত ১১ বার আটক হন তিনি। পরবর্তীতে বিভিন্ন নীতি নিয়ে ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের সঙ্গে তার মতবিরোধ দেখা দেয়। দাহলানের বিরুদ্ধে ইয়াসির আরাফাতকে হত্যার অভিযোগও আনা হয়৷ এখন আরব আমিরাতের আবু ধাবিতে বাস করছেন দাহলানও।
আশরাফ গানি
তালেবান কাবুল দখল করার পরই প্রতিবেশি দেশ তাজিকিস্তানে পালিয়ে যান আশরাফ গানি। পরে অবশ্য কিছু গণমাধ্যম দাবি করে, তাজিকিস্তান অনুমতি না দেওয়ায় ওমানে চলে গেছেন আফগান প্রেসিডেন্ট। এরপর তিনি কোথায় আছেন, এ নিয়ে নানা বরাতে ভিন্ন ভিন্ন দেশের নাম গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। সকল ধোঁয়াশা কাটিয়ে ১৮ আগস্ট নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে আশরাফ গনি জানান তিনি আরব আমিরাতে আশ্রয় নিয়েছেন। আমিরাত এক লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছে, মানবিক কারণে আশরাফ গানি ও তাঁর পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।